ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বাংলা

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি

লুৎফা বেগম
🕐 ২:১২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০১৯

রচনা : আমার পোষা প্রাণী
ভূমিকা : মানুষ সমাজে বাস করে। সমাজে বসবাসের ফলে মানুষে-মানুষে যেমন স্নেহ-প্রীতির সম্পর্ক গড়ে ওঠে, তেমনি অন্য জীবের সঙ্গেও মানুষের মমত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। হৃদয়ের সেই মমত্ববোধ থেকেই মানুষ আদিম কাল থেকেই বিভিন্ন গৃহপালিত জীব, প্রাণী-পাখি ইত্যাদি পুষে থাকে। মানুষ কখনো গৃহস্থালি প্রয়োজনে গরু, ঘোড়া, মহিষ, ছাগল, কুকুর, বিড়াল হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন পাখি পুষে থাকে। কিন্তু তার পরও সেই প্রাণীর প্রতি তার এক ধরনের মমতা জন্মে। তবে শুধু মনের আনন্দে কোনো প্রাণী লালন-পালন করলেই তাকে পোষা প্রাণী বলে। আমার পোষা প্রাণীর নাম কুকুর।

পোষা প্রাণীর বর্ণনা : আমার পোষা কুকুরটিকে আমি খুব ছোট অবস্থায় আমাদের বাড়ির গেটের সামনে পাই। আমাকে গেট খুলে ভেতরে ঢুকতে দেখে ওটিও আমার পেছন পেছন চলে আসে। আমি তখন কুকুরছানাটিকে একটা সরু দড়ি দিয়ে বারান্দায় থামের সঙ্গে বেঁধে রাখি। তারপর ওটাকে বাটিতে করে দুধ খেতে দিলে একটু একটু করে সবটাই খেয়ে ফেলে। কুকুরটির পেট ভরে যাওয়ায় ওটি আমার দিকে চেয়ে আনন্দে লেজ নাড়তে থাকে। আমি তখনই সিদ্ধান্ত নিই ওটাকে পোষার। ছানাটির গায়ের রং ছিল একেবারে বাদামি, তাই আমি আদর করে কুকুরছানাটির নামও রাখি ব্রাউনি। ব্রাউনির থাকার জন্য একটা টেলিভিশনের বাক্স দিয়ে ঘর বানিয়ে দিই।

খাদ্যাভ্যাস : আমার ব্রাউনি কুকুরছানাটি আস্তে আস্তে বড় হলে ওর খাদ্যাভ্যাসও আমি বদলে দিই। এখন ব্রাউনি আমাদের মতোই ভাত-মাছ-মাংস সবই খায়। একটা আলাদা প্লেটে আমি ওর জন্য ভাত-মাছ-মাংস মাখিয়ে সামনে ধরে ‘ব্রাউনি’ বলে ডাকলেই দ্রুত ছুটে এসে লেজ নেড়ে প্রথমে আনন্দ প্রকাশ করে, তারপর চেটেপুটে পুরোটাই খেয়ে নেয়। তবে হাড়-মাংস পেলে খুবই খুশি হয়।

কেন প্রিয় : কুকুর এমনিতেই প্রভুভক্ত জীব। আমি স্কুল থেকে বাসায় ঢোকার আগে কলিংবেল টিপলে ব্রাউনি ঘেউ ঘেউ করতে থাকে। গেট খুলতে দেরি হলে একছুটে আমার মায়ের কাছে যায়। আবার দৌড়ে গেটে আসে। যতক্ষণ গেট কেউ না খোলে ততক্ষণ সে ঘেউ ঘেউ করতেই থাকে। আমি বাসায় প্রবেশ করে ওর সঙ্গে দু-একটা কথা বললে ও আনন্দে জেল নাড়তে থাকে, কখনো বা মাটিতে হুটোপুটি খেতে থাকে। এ ছাড়া ব্রাউনি বাসায় অপরিচিত কাউকে ঢুকতে দেখলে অনবরত ঘেউ ঘেউ করতে থাকে। আমরা ঘুমালেও ব্রাউনি সারা রাত বাসা পাহারা দেয়। একটা খুটখাট শব্দেও সে ঘেউ ঘেউ করতে থাকে। ফলে বাসা থেকে কোনো কিছু হারানোর ভয় আমরা করি না। এসব কারণে ব্রাউনি শুধু আমারই নয়, পরিবারের সবার প্রিয় হয়ে উঠেছে।

উপসংহার : আমার কুকুরছানাটিকে আমি নিজে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনে বড় করেছি বলে ওটির প্রতি আমার গভীর মমতা জন্মেছে। ওটিকে পাড়ার কোনো দুষ্টু ছেলে ধরল কি না, কেউ মারল কি না অথবা হারিয়ে গেল কি না-বাড়ি ফিরে যতক্ষণ ওটিকে না দেখি ততক্ষণ এসব ভাবনা হয়। ব্রাউনি আমার অবসরের সঙ্গী। ওর সঙ্গে আমি বন্ধুর মতো খেলা করি, কথা বলি, বিভিন্ন রকম খাবার দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চালাই। এককথায় আমি আমার পোষা কুকুরছানা ব্রাউনিকে লালন-পালন করে খুব আনন্দ পাই।

লুৎফা বেগম, সিনিয়র শিক্ষক, বিএএফ শাহীন কলেজ, কুর্মিটোলা, ঢাকা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper