ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ড্রেজার নিয়ে বিরোধ

আ.লীগের দুপক্ষের গোলাগুলি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
🕐 ১০:০০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০১৯

রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর মতিহার থানাধীন বাজে কাজলা ওয়ার্ড ফুলতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদের মধ্যে ২৮ নম্বর ওয়ার্ড (পশ্চিম) স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক জুবায়ের হাসান জনি (২৬) এর ডান পায়ে গুলি লেগেছে। অপরজন একই ওয়ার্ডের যুবলীগের সদস্য সুজন (২৮)। তার বাম হাতের কনুই থেকে কব্জি পর্যন্ত চাপাতির আঘাত রয়েছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্র এবং আহতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সম্মিলিতভাবে বালুর ব্যবসা করার জন্য ২০১০ সালে ফুলতলা ২৮ নম্বর ওয়ার্ড মতিহার থানা (পশ্চিম) আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি আব্দুস সাত্তার বিভিন্ন জনের কাছে অর্থ আদায় করেন। সেই অর্থ দিয়ে পরবর্তীতে কেনা হয় ড্রেজার ও বালিবাহী বোর্ড। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে বালুর ব্যবসাটি বন্ধ হয়ে যায়। ব্যবসায়ে যারা অর্থ দিয়ে বিনিয়োগ করেছিল তারা একাধিকবার সেই অর্থ সাবেক সভাপতি আব্দুস সাত্তারের কাছে ফেরত চাইলেও এতে অসম্মতি জানান তিনি।

এ বছর সেই ড্রেজার পুনরায় চালু করে ব্যবসা চালানোর পরিকল্পনা নেয় আব্দুস সাত্তার। কিন্তু তাতে বাধা দেয় অংশীদাররা। পরে মীমাংসার আহ্বান জানালে তিনি করেননি।

শুক্রবার সকালে জুবায়ের হাসান জনি, সুজনসহ আরও অনেকে গিয়ে ড্রেজারটি ঠিক আছে কিনা দেখতে গেলে তাদের উপর চড়াও হয় আব্দুস সাত্তারের ছেলে টনি এবং ডনিসহ অন্তত ২০ জন।

এ সময় তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে ড্রেজারে থাকা অবস্থায় জনিকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছোড়েন তারা। এতে জনির ডান পায়ে গুলি লাগলে সে ড্রেজার থেকে নিচে পড়ে যায় এবং সুজনকে ধারালো চাপাতি দিয়ে কোপানো হয়। এতে তার বাম হাতের কনুই থেকে কব্জি পর্যন্ত অংশ ঝুলে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন স্থানীয়রা।

হাসপাতালে আহতাবস্থায় জুবায়ের হাসান জনি বলেন, ‘ড্রেজার চালু করা নিয়ে বেশ কদিন থেকেই বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সাত্তারের সঙ্গে স্থানীয়দের বিবাদ চলছিল। গতকাল শুক্রবার সকালে আমরা ড্রেজার চেক করতে গেছি শুনে আব্দুস সাত্তার তার ছেলে টনি ও ডনিকে পিস্তল দিয়ে পাঠায়। তার সঙ্গে আরও অন্তত ২০ জন এসে আমাদের মারধর করে। এরপর তারা আমাদের উদ্দেশে তিনটি গুলি ছোড়ে, যার একটি আমার পায়ে লাগে।’

এদিকে গতকাল সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে মতিহার থানা পুলিশ ও মহানগর গোয়েন্দা শাখার ডিবি পুলিশ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথভাবে অভিযান চালায় আব্দুস সাত্তারের বাড়িতে। এ সময় সাত্তারের বাড়ি থেকে বেশ কিছু ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ।

মতিহার থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ড্রেজার ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এক পক্ষের হামলায় দুজন আহত হয়েছেন। তাদের রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকে ও অস্ত্র উদ্ধারে সাত্তারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

মহানগর পুলিশের মুখপাত্র মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘গোলাগুলির ঘটনা শুনেছি। পুরো ঘটনা উদ্ঘাটন ও অপরাধীদের আটকে মাঠে কাজ করছে পুলিশ।’

 
Electronic Paper