ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বৈধ বাংলাদেশি শ্রমিকও ফেরত পাঠাচ্ছে সৌদি

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১১:০১ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১০, ২০১৯

বাংলাদেশের জন্য অন্যতম শ্রমবাজার সৌদি আরবে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়েছে। অবৈধদের সঙ্গে বৈধ আকামাধারীরাও (কাজের অনুমতিপত্র) এই গ্রেফতার ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ধরে ধরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে নিজ দেশে। চলতি মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৯ দিনে সৌদি আরব থেকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ৪৪১ জন শ্রমিককে। এ নিয়ে গত ১০ মাসে কমপক্ষে ১১ হাজার কর্মীকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ গতকাল বুধবার সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ৬৩ শ্রমিক। এর আগের দিন মঙ্গলবার এসেছেন ৪২ জন। ৩ অক্টোবর ও ৪ অক্টোবর এই দুদিনের ব্যবধানে ২৫০ কর্মী সে দেশ থেকে ফিরে এসেছেন। এরপর ৫ অক্টোবর আরও ৮৬ জন সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে আসেন। বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন এবং প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ফিরে আসা কর্মীরা জানান, সৌদি আরবে বেশ কিছুদিন ধরে ধরপাকড়ের শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। সেই অভিযানে বাদ যাচ্ছে না বৈধ আকামাধারীরাও। ফেরত অনেক কর্মীর অভিযোগ, তারা কর্মস্থল থেকে বাসস্থানে ফেরার পথে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। সে সময় নিয়োগকর্তাকে ফোন করা হলেও তারা দায়িত্ব নিচ্ছেন না।
বরং আকামা থাকা সত্ত্বেও কর্মীদের শরণার্থী আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আবার দীর্ঘদিন অবৈধভাবে থাকার কারণেও অনে?ককে আটক ক?রে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
শামীম নামে সৌদি ফেরত এক শ্রমিকের দাবি, মাত্র দেড় মাস আগে সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ করে তিনি সৌদি আরব গিয়েছিলেন। কিন্তু আকামা থাকা সত্ত্বেও তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

আরেক কর্মী মুন্সীগঞ্জের মহিউদ্দিন জানান, তিনি ১০ বছর ধরে সৌদি আরবে ছিলেন। আকামাসহ বৈধভাবেই ছিলেন। দুদিন আগে এশার নামাজ পড়তে মসজিদে যাবার জন্য রুম থেকে বের হলে সৌদি ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তিনি আকামা দেখালেও তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। আটকের কারণ জানতে চাইলে তাকে মারধর করা হয়।

শামীম ও মহিউদ্দিনের মতোই নিজেদের দুর্ভোগের কথা জানান নোয়াখালীর সাইফুল, কুমিল্লার রাজু, ঢাকার রাসেলসহ আরও অনেকে। দেশে ফেরা কর্মীদের অভিযোগ- তাদের আকামা থাকা সত্ত্বেও তাদের ধরে সবজি, খেজুর ও পানি বিক্রিসহ ভিক্ষা করার মতো মিথ্যা অভিযোগ এনে দেশে পাঠানো হচ্ছে।

ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, চলতি মাসেই দেশে ফিরলেন ৪৪১ কর্মী। এ বছর ১০ থেকে ১১ হাজার কর্মীকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সাধারণ ফ্রি ভিসার নামে গিয়ে এক নিয়োগকর্তার বদলে আরেক জায়গায় কাজ করলে কর্মীদের ফেরত পাঠানো হতো। কিন্তু এবার ফেরত আসা কর্মীদের অনেকেই বলছেন, তাদের বৈধ আকামা ছিল। আসলেই এমনটা হয়েছে কিনা, সেটা দূতাবাস ও মন্ত্রণালয় খতিয়ে দেখতে পারে। কেন বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে, সে কারণটা বের করে করণীয় ঠিক করা উচিত। যেন নতুন করে যারা সৌদি আরবে যেতে চাইছেন তারা বিপদে না পড়েন।

ফেরত আসা কর্মীদের বিমানবন্দরেরর প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরি সহায়তা প্রদান করা হয়।

 
Electronic Paper