দুর্নীতিতে ‘উন্নতি’ করেছি
সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৪৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০৯, ২০১৯
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশ দুর্নীতিতে প্রচণ্ড উন্নতি করেছে। তার নমুনাও এরই মধ্যে দেখা যাচ্ছে। উন্নয়ন হলেও মানবিকতায় এগোতে পারেনি বাংলাদেশ।
বুধবার (৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার আইনের বাস্তবায়ন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় সুলতানা কামাল আরও বলেন, আমরা উন্নয়নের একেবারে মহাসড়কে চলে গেছি, উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে গেছি, সবকিছুই হয়ে গেছি। কিন্তু উন্নয়নের সঙ্গে একই তালে কি আমরা মানবিকতাকে সামনে এগিয়ে যেতে পেরেছি? আমরা কি সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পেরেছি?
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, উন্নয়ন বলতে আমরা শুধু রাস্তাঘাট, বড় বড় প্রকল্প... যেটার মধ্যে আবার বালিশ কিনতে লাগে চৌদ্দ হাজার টাকা, তুলতে লাগবে আরও চার হাজার টাকা। আমরা উন্নতি করেছি দুর্নীতিতে, প্রচ- উন্নয়ন করেছি। যেটার কিছু কিছু নমুনা এখন বের হয়ে আসছে। মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, সরকার সম্প্রতি ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান শুরু করলেও দুর্নীতির অন্যসব ক্ষেত্র এর বাইরে থেকে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে, ক্ষমতা দেখিয়ে মানুষের ওপর অন্যায় আচরণ করা হচ্ছে, ব্যাংক লুট করে ফেলা হচ্ছে, শেয়ার মার্কেটে কেলেঙ্কারি করা হচ্ছে... এই জায়গায় কিন্তু আমরা কিছু বলছি না।
সুলতানা কামাল বলেন, একটা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছিল, কোটা বাতিল করে দেওয়া হলো। উনি যখন আইন করে দিলেন, সেই আইন বাস্তবায়ন করতে কারও কোনো উদ্যোগ দেখা গেল না। কিন্তু যখন কোটা বাতিলের কথা এল, সেই কোটা বাতিলের সূত্র ধরে কিন্তু কোটাগুলো বাতিল হয়ে গেল। কোটা অনুযায়ী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যা পেতেন সেটা দেওয়া হচ্ছে না।
‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ : বাস্তবায়ন, বিদ্যমান পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পড়ে শোনান প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজেদা আক্তার। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ প্রণয়নের আগে প্রতিবন্ধীরা সমাজের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়েছিল। এ আইনের ফলে প্রতিবন্ধীরা তাদের অধিকার পাবে, সম্মানের সঙ্গে জীবনধারণ করতে পারবে। কিন্তু এই আইন হওয়ার পর ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির কোনো সাদৃশ্য আসেনি। প্রতিবন্ধীরা এ আইনের কোনো সুফল ভোগ করতে পারেনি। আইন বাস্তবায়নে যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তাদের ব্যর্থতার কারণেই আইনটি এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নে ছয়দফা সুপারিশ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। আরও বক্তব্য দেন- ব্লাস্টের গবেষণা উপদেষ্টা মো. তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক, প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদের সভাপতি নাসিমা আক্তার।