হুমকিতে মুহুরী সেচ প্রকল্প
ফেনী নদীর পানিচুক্তি
ফেনী প্রতিনিধি
🕐 ৬:০৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০৮, ২০১৯
ভারতের সাথে ফেনী নদীর পানি চুক্তিতে হুমকির মুখে পড়বে ফেনীর সোনাগাজীর মুহুরী সেচ প্রকল্প। স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় ফেনী নদীর ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করতে পারবে ভারত। এ পানি ভারত ত্রিপুরা সাব্রুম শহরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্পে ব্যবহার করবে।
ফেনী নদী অভিন্ন নয়, শুধুই বাংলাদেশের সম্পদ। এর উৎপত্তি, প্রবাহ এবং ভৌগলিক অবস্থান নিশ্চিত করে ফেনী নদী কোনভাবেই আন্তর্জাতিক নদী প্রবাহের সীমা রেখায় প্রবাহিত নয়। খাগড়াছড়ির এক হাজার ৭০০ একর অমীমাংসিত বাংলাদেশের যে ভূমির ওপর দিয়ে এ নদী প্রবাহিত। ভারত নিজেদের উত্তর-পূর্ব অংশের বেশ কটি রাজ্যের পানির অভাব মেটাতে দীর্ঘদিন নানা কৌশলে ফেনী নদীকে আন্তর্জাতক নদী প্রমাণের চেষ্টা করে যাচ্ছে।
এ প্রকল্প বাস্তবায়নে পানি প্রত্যাহার করে নেওয়া হলে শুষ্ক মৌসুমে নদী তীরবর্তী চট্টগ্রামের মিরসরাই, খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা, ছাগলনাইয়া, পরশুরাম, সোনাগাজীর মুহুরী সেচ প্রকল্প, ফুলগাজী, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের দক্ষিণাংশ এবং নোয়াখালী-লক্ষীপুরের কিছু অংশের বিভিন্ন সেচ প্রকল্পে পানির জোগান অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এতে করে লাখ লাখ হেক্টর জমি চাষাবাদের অনাবাদি হয়ে পড়বে। অকার্যকর হয়ে পড়বে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেচ প্রকল্প মুহুরী সেচ প্রকল্প।
যার আওতায় এ অঞ্চলের প্রায় ১৪ থেকে ১৫টি উপজেলার ৮-৯ লাখ হেক্টর জমিতে লোনামুক্ত পানির সরবরাহ করা হয়। এছাড়া মুহুরী প্রকল্পের নয়নাভিরাম পর্যটন সম্ভাবনা হারিয়ে যাবে নিমিষেই। হুমকির মুখে পড়বে কয়েক লক্ষ হেক্টর জমির গাছপালা। ফেনী নদী, মুহুরী ও কালিদাস পাহালিয়া নদীকে ঘিরে গড়ে ওঠা প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মৎস্য খামার বন্ধ হয়ে যাবে।
নদীর তীরবর্তী ২০-২২ হাজার জেলে পরিবারের জীবন-জীবিকা অন্ধকারের মুখে পড়বে। বিলীন হয়ে যাবে বিরল প্রজাতির মাছ ও পশু-পাখি। সামুদ্রিক লবনাক্ততা বৃদ্ধি পেয়ে ধ্বংস হবে সবুজ বনায়ন। দেখা দেবে পরিবেশের স্বাভাবিক ভারসাম্যহীনতা।
ফেনী জেলা উন্নয়ন আন্দোলনের নেতা আবু তৈয়ব আজাদ জানান, শুষ্ক মৌসুমে ফেনী, মিরসরাই ও রামগড়সহ পুরো এলাকার আবাদি জমি চাষাবাদ অনুপযোগী হয়ে পড়বে।