ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সেই জমজ বোনের দায়িত্ব নিলেন ডিসি

বাগেরহাট প্রতিনিধি
🕐 ৪:৪৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০৫, ২০১৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সুযোগ পাওয়া গরীব মেধাবী জমজ বোন সাদিয়া আক্তার সুরাইয়া ও নাদিরা ফারজানা সুমাইয়ার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মামুনুর রশীদ। শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে সার্কিটে হাউসে ওই দুই শিক্ষার্থী ও তাদের মায়ের সঙ্গে কথা বলে এ আশ্বাস দেন ডিসি।

এসময় বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান, মোহাম্মাদ শাহজাহান, রাহাত উজ্জামান, শিক্ষার্থীদের মা শাহিদা বেগম, কাউন্সিলর মোল্লা নাসির উদ্দিনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন মেধাবী ওই দুই শিক্ষার্থীকে দু’টি মোবাইল ফোন উপহার দেন।

নাসির উদ্দিন বলেন, বাগেরহাটে এমন দু’জন মেধাবী শিক্ষার্থী রয়েছে বিষয়টি জানতে পেরে সবাই তাদের বাড়িতে যাই। বাগেরহাট-২ (সদর ও কচুয়া) আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়কে বিষয়টি জানিয়েছি। মেধাবী ওই মেয়েরা যাতে নির্বিঘ্নে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে বলেছেন তিনি। আমরা সবসময় মেধাবীদের পাশে থাকবো।

এছাড়া বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমানও এ দুই শিক্ষার্থীকে পড়াশোনার জন্য ৫০ হাজার টাকা দেওয়া কথা বলেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

ডিসি মামুনুর রশীদ বলেন, বর্তমান সমাজে মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন হচ্ছে। দেশ যেমন এগিয়ে যাচ্ছে, মানুষও মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসছে। তাই তোমাদের লেখাপড়ার জন্য আমরা জেলা প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করবো। পড়াশোনা করে তোমরা ভালো মানুষ হবে, এ প্রত্যাশা করি।

বাগেরহাট সদর উপজেলার হরিণখানা এলাকার রাজমিস্ত্রি দিনমজুর বাবা মহিদুল হাওলাদারের জমজ মেয়ে সুরাইয়া ও সুমাইয়া। অর্থাভাবে টিউশনি করিয়ে পড়াশোনা চালিয়েছেন তারা। এরপরও মাধ্যমিকে বাণিজ্য বিভাগে সুরাইয়া ৪.৮৬, সুমাইয়া ৪.৯১ এবং উচ্চ মাধ্যমিকে দুই বোনই গোল্ডেন এ-প্লাস পান। ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষায় গ-ইউনিটে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (গ-ইউনিট) বাণিজ্য অনুষদে সুমাইয়ার মেধাক্রম ৮৪৬ এবং সুরাইয়ার মেধাক্রম ১১৬৩। ঢাবিতে তাদের ভর্তির শেষ দিন ৩১ অক্টোবর।

মা শাহিদা বেগম বলেন, অর্থকষ্টে থাকার পরও মেয়েদের পড়াশোনা করিয়েছি। মেয়ারা ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পর অনেক চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু সবাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় এখন একটু ভারমুক্ত হয়েছি। আমি আমার সন্তানদের উন্নতি কামনা করি।

সুরাইয়া বলেন, ঢাবিতে সুযোগ পাওয়ার পরে এক ধরনের অনিশ্চয়তা কাজ করছিল মনের মধ্যে। ডিসি, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়র মহোদয়সহ অনেকের সহযোগিতার আশ্বাসের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। সবার কাছে দোয়া চাই। যাতে ভালো লেখাপড়া করে দেশের সেবা করতে পারি।

 
Electronic Paper