নিউইয়র্কের ওই জায়গাটার কথা মনে নেই। ক্যাসিনো সম্পর্কে তার আগে আমার ধারণা নেই। এলাহী কারবার। স্বল্পবসনারা ট্রেতে শক্ত ও নরম পানীয় নিয়ে ভ্রমণরত ছিল। কম্পিউটারে গভীর মনোযোগে বেশিরভাগ ষাটোর্ধ্ব মানুষ। বিশাল চাকতির মতো ঘুরন্ত জিনিসটা দেখে চিনলাম। আমাদের দেশে গ্রামাঞ্চলে যেসব একজিবিশন হয় সেখানে এমন আয়োজন থাকে। তখন পর্যন্ত টাকা উপার্জনের নেশা দেখেছি, পকেট থেকে বের করে ভাগ্য অন্বেষণের এমন শিহরণ জাগানিয়া নেশা দেখিনি। মনে হচ্ছে পৃথিবীতে তার চেয়ে কামনা বাসনা আর ভেতরের ক্ষুধা মেটানোর মতো আর কিছু নেই। ঘণ্টা দুই তিন ছিলাম।
এর মধ্যে অনেককে পকেট শেষ করে এটিএম কার্ড নিয়ে ছুটতে দেখলাম। কেউ কেউ পকেট থেকে ছোট ছোট নোট বের করছে। কম্পিউটারে ঢোকাচ্ছে, শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমি দেখেশুনে আর নিজেকে অবদমন করার যৌক্তিকতা খুঁজে পেলাম না। ভাগ্য পরীক্ষা করে দেখতে প্রস্তুত হলাম। দুইবার খেললাম। কম্পিউটারে। কীভাবে খেলেছিলাম মনে নেই। ২০ ডলার ধরে ৫০ ডলার পেয়ে পকেটে দ্রুত ঢুকিয়ে, নিজেকে কড়া শাসনে বেঁধে রাখলাম।
দেখলাম আমার বন্ধুস্থানীয় ভাইটি পকেটের হাজার ডলার শেষ করে বুথ থেকে আরও পাঁচশ’ তুললেন। পরের আধাঘণ্টায় সেটি শেষ হলে বললেন, এখানে সবদিন সবার না। বললাম, ভাই এই কথাটা বুঝতে আমাদের দেশের লাখের ওপরে তামা করে দিলেন! বললেন, আরেকদিন ঠিকই পাঁচ হাজার ডলার আইসা পড়ব।
আদিত্য শাহীন
সাংবাদিক