ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

বন্ধুত্ব ও বন্ধনে আঠারো

আসিফ হাসান রাজু
🕐 ১:২৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯

আঠারো মানেই তারুণ্য। সদা হাস্যোজ্জ্বল। আঠারো মানেই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। ‘আঠারো বছর বয়স কী দুঃসাহসেরা দেয় যে উঁকি’ বিদ্রোহের কবি, বিপ্লবের কবি, প্রতিবাদের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য তার এই কবিতার শেষে লিখেছিলেন ‘এ দেশের বুকে আঠারো আসুক নেমে।’ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১৮তম ব্যাচ যেন কবি সুকান্তের ভাষারই প্রতিচ্ছবি। বিভাগের প্রতিটি অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে সব কাজেই যেন তাদের সরব উপস্থিতি। নিজেদের মধ্যে একতা, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার বন্ধনে তারা আবদ্ধ। মানুষের জীবন আর নদীর স্রোত একই রকমের; উভয়ই বহমান। নদীর গতিপথকে যে রকম আটকে রাখা যায় না; তদ্রুপ জীবন ও সুখ-দুঃখকে সঙ্গে নিয়ে বয়ে চলে আপন মহিমায়। জীবন চলার পথে আমাদের সবাইকে বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যখন একজন শিক্ষার্থী ভর্তি হন, তখন তিনি খুবই একা। তার চারপাশে সব মুখই তখন অচেনা থাকে। ধীরে ধীরে সেই অচেনা মানুষগুলোই হয়ে ওঠে সব থেকে আপন মুখ হয়ে। আর তার নিজ বিভাগ হয়ে ওঠে তার দ্বিতীয় পরিবার হয়ে। নিজ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা যেন হয়ে ওঠে তার আপন পরিবারের সদস্যদের মতো। এমনি এক বন্ধনে আবদ্ধ নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা, জানান রেজওয়ান বারী। শনিবার ক্লাস পার্টিতে অংশ নেওয়া আরেক শিক্ষার্থী নূর মুর্শিদা রাসূল চার বছর একত্রে কাটানো স্মৃতির কথা তুলে ধরে জানালেন ‘ব্যাচের শিক্ষার্থীরা শুধু তার বন্ধু নয়, তারা তার সহযোগী, সহযোদ্ধা। সুখে-দুঃখে যারা সবার আগে এগিয়ে আসে। যাদের কাছে নিজের অনেক অব্যক্ত কথাও শেয়ার করা যায়।’

শনিবার সকাল থেকে দিনব্যাপী চলে তাদের ক্লাস পার্টি। সকালে কেক কাটার মধ্য দিয়ে শুরু। পরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে একসঙ্গে দলবেঁধে ঘুরতে বের হওয়া। সঙ্গে নিজেদের অমলিন স্মৃতিগুলোকে ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা। কেউ ব্যস্ত সেলফিতে আবার কেউ ব্যস্ত গ্রুপ করে ছবি তোলা নিয়ে। এভাবে ক্যাম্পাস ঘুরে আবার বিভাগে ফিরে এসে থিয়েটার রুমে দুপুরের খাবার খেয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নেচে-গেয়ে নিজেদের ব্যাচ ডে-কে স্মরণীয় করে রাখার চেষ্টা। যাদের সাথে কিছু সময়ের জন্যে যোগ দিয়েছিলেন বিভাগের শিক্ষকরাও।

এভাবে দিনটি যেন জীবন পটে হয়ে রবে ক্যাম্পাস জীবনের অন্যতম দিন বলে জানান অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী জুবায়দা গুলশানা আরা লিজা। এভাবে ব্যস্ত একটা দিন কাটিয়ে একে অপরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিদায় নিলেন। বেলা শেষে দিনটি আমাদের ইঙ্গিত দিল সময় ফুরিয়ে এসেছে। ছেড়ে যেতে হবে হয়তো খুব দ্রুত আঠারোর এ বন্ধন। খুব দ্রুতই যেন আমাদের সময় চলে যাচ্ছে...

 
Electronic Paper