ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

জনবল সংকটে কোটি টাকার ভবন

নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে

মোশাররফ হোসেন, নীলফামারী
🕐 ৭:৪১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯

নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে জনবল সংকটে পড়ে আছে ৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি নতুন ভবন। হাসপাতালটিতে রোগীর শয্যা সংকট প্রকট হলেও পাঁচ মাস ধরে পড়ে আছে ওই ভবনটি। ওই হাসপাতালটি ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীতে অতিরিক্ত ১৫০ শয্যার ঘাটতি পূরণে নির্মিত হয় ভবনটি। আট তলা ভিত্তির ভবনটির ছয় তলা নির্মাণ কাজ শেষে হস্তান্তর হয়েছে পাঁচ মাস আগে।

এলাকাবাসী বলছেন, দিন দিন রোগীর চাপ বাড়ছে হাসপাতালে। এমন চাপে পুরাতন ১০০ শয্যার ভবনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের মেঝে এবং বারান্দান শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে আগতরা। নতুন ভবনটি সকল কাজ শেষ হলেও পড়ে আছে পাঁচ মাস ধরে। হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলছেন, জনবল বরাদ্দ না পাওয়ায় ২৫০ শয্যার কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। ফলে নতুন ভবনটিও চালু হচ্ছে না। ভবনটিতে কার্যক্রম শুরু করা গেলে রোগীর শয্যা সংকট কেটে যাবে।

ওই হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীর গাদাগাদি অবস্থা। শয্যা সংকটে অনেকের স্থান হয়েছে বিভিন্ন ওয়ার্ডের মেঝে ও বারান্দায়। হাসপাতালের ১০০ শয্যায় গত শুক্রবার ৩৩২ জন, শনিবার ৩৩০ জন এবং রোববার ৩০৭ জন ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে ১০ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে শনিবার ১০২ জন এবং রোববার ৮৫ জনকে পাওয়া গেছে।

অপরদিকে ১০ শয্যার ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শনিবার ৩০ জন এবং রোববার ৪১ জন ভর্তি ছিলেন। ওই ওয়ার্ডে বারান্দায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন টুপামারী ইউনিয়নের সিতারপাঠ গ্রামের আজিজুল ইসলাম।

তার স্ত্রী জিন্নাতুল নেছা বলেন, মানুষটার জ্বর তিনদিন ধরি। এর উপর পাতলা পায়খানা। খোলা বারেন্দার মাঝিয়াত জ্বরের মাইনষিটাক রাখা কি সম্ভব’

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, ১০০ শয্যার ওই হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নীতের ঘোষণা হয় ২০১১ সালে। এরপর ৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫০ শয্যার সম্প্রসারিত একটি ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালের ২৫ জুলাই। আট তলা ভিত্তির ভবনটির ছয় তলার নির্মাণকাজে সময় লাগে প্রায় ছয় বছর। চলতি বছরের ৯ এপ্রিল জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে ভবনটি হস্তান্তর করে গণপূর্ত বিভাগ। ২৫০ শয্যার জনবল এবং অর্থ বরাদ্দের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ২৫০ শয্যার জনবল ও অর্থ বরাদ্দের অভাবে কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবু শফি মাহমুদ বলেন, ‘ছয়মাস আগে এ হাসপাতালে যোগদান করেছি। সে থেকে দেখছি প্রতিদিন ৩৫০-৪০০ রোগী ভর্তি থাকে।

এছাড়াও বর্হিবিভাগে ৮০০-৯০০ রোগি চিকিৎসা নেন। ১০০ শয্যার ভবনে স্থান সংকটে বাধ্য হয়ে বারান্দা ও মেঝেতে রেখে রোগীর চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। ২৫০ শয্যার কার্যক্রম শুরু হলে নতুন ভবনটিও চালু হতে। তখন সমস্যা অনেকটাই থাকবে না।’

সিভিল সার্জন রনজিৎ কুমার বর্মন বলেন, হাসপাতালটি ১০০ শয্যার ছিল। সেখান থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। এজন্য নতুন একটি ভবন নির্মাণ শেষে বুঝে পেয়েছি। কিন্তু জনবল কাঠামো এখনো ৫০ শয্যার রয়েছে।

 
Electronic Paper