ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মাদকে বিপর্যস্ত যুবসমাজ

হৃদয় ইসলাম, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার)
🕐 ২:৫৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের চা বাগানগুলোর উৎপাদিত মদপান করে চা শ্রমিক পরিবারসমূহে সবসময়ে ঝগড়া, কলহ, হানাহানি ও বিশৃঙ্খলা লেগেই আছে। দীর্ঘ সময় থেকে চলে আসা এই প্রবণতা কোনমতেই রোধ হচ্ছে না। অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন চা বাগানসমূহে ব্রিটিশ আমল থেকে প্রচলিত হয়ে আসা মদের যে সমারোহ ছিল তা এখনও অব্যাহত রয়েছে।

সারাদিন পরিশ্রমের পর সন্ধ্যা হলেই মদ পান করে মাতাল শ্রমিকরা পরিবারে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে ঝগড়াঝাটি, হানাহানি, ভাঙচুরসহ নানা ধরণের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। ফলে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত ছাড়াও বিপর্যস্ত হচ্ছে চা বাগানের মাদকাসক্ত যুবসমাজ। চাতলাপুর ও কানিহাটি চা বাগানের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, শমশেরনগর থেকে সরাসরি ভারতের ত্রিপুরা-কৈলাশহর ও শুল্ক স্থলবন্দর রুট থাকায় ভারতীয় মাদকের বিস্তার লাভ করছে। সম্প্রতি সময়ে চাতলাপুর ও কানিহাটি চা বাগানে বাগানের মাদক ছাড়াও ইয়াবা, ফেন্সিডিলসহ ভারতীয় মাদকসেবীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মাদকসেবীরাও এসব স্থানে এসে আড্ডায় মেতে উঠেন।

কয়েকটি চা বাগান ঘুরে জানা যায়, চা বাগান গুলোতে এখনও প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ শ্রমিক ও যুবসমাজ মদ পানে আসক্ত। সন্ধ্যার পরেই মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে মদ পান করে তারা। নিশাদল, চিটাগুড়, ইউরিয়া সার, পুরাতন ভাত এসব নানা পদার্থ দিয়ে চোলাই ও হাড়িয়া মদ তৈরী হয় বলে জানান চা শ্রমিকরা। যারা বেশি পরিমানে মদ পান করে তারা মাতাল হয়ে ঝগড়া-ঝাটি, স্ত্রী-সন্তানদের মারধর করে। ঘরে গিয়ে হাড়ি-পাতিল, চুলা ভেঙে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করে। পঞ্চাশ ভাগ পুরুষ আসক্ত বলে শ্রমিকরা অভিযোগ করেন।

উপজেলার দেওছড়া চা বাগানের দেওরাজ রবিদাস বলেন, ‘বাগানের শ্রমিকরা প্রতিরাতে উপার্জিত সব টাকা দিয়ে মদ কিনে খায়। এরপর মাতাল হয়ে ঝগড়াঝাটি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।’

কানিহাটি চা বাগানের কয়েকজন মহিলা শ্রমিক বলেন, ‘তাদের স্বামীরা সন্ধ্যার পর মদের পাট্টায় গিয়ে মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তাঘাটে ও ঘরে এসে ঝগড়াঝাটি, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। সন্তানদেরও গালিগালাজ করেন।

 
Electronic Paper