ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

১১ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ১৬ হাজার কোটি টাকা

জাফর আহমদ
🕐 ১০:২১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণে ১১ ব্যাংক ব্যর্থ হয়েছে। এ সব ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। সামগ্রিক মূলধন সংরক্ষণের হার দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। মার্চ মাসে সংরক্ষণের হার ছিল ১১ দশমিক ৪১ শতাংশ। মার্চের তুলনায় জুনে মূলধন কিছুটা বাড়লেও ঘাটতির তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও একটি ব্যাংক। মার্চ প্রান্তিকে মূলধন ঘাটতি ব্যাংকের সংখ্যা ছিল ১০টি। মার্চে টাকার অংকে মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকে যখন সুশাসন না থাকে, তখন জাল-জালিয়াতির প্রবণতা বেড়ে যায়। ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণও বাড়ে। ব্যাংকিং খাতে বর্তমানে যেভাবে খেলাপি ঋণ বেড়েছে তার প্রধান কারণ জালিয়াতি। এর প্রভাবে মূলধন ঘাটতি বাড়ছে। তিনি বলেন, প্রতিবছরই সরকারি ব্যাংকগুলোর ঘাটতি মেটাতে জনগণের করের টাকা থেকে ব্যাংকগুলোকে মূলধনের জোগান দেওয়া হয়। কিন্তু এর আগে তাদের কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা উচিত। আন্তর্জাতিক নীতিমালার আলোকে ব্যাংকগুলোকে মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাসেল-৩ নীতিমালার আলোকে ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ অথবা ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে যেটি বেশি সে পরিমাণ মূলধন রাখতে হচ্ছে। কোনো ব্যাংক এ পরিমাণ অর্থ সংরক্ষণে ব্যর্থ হলে মূলধন ঘাটতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, খেলাপি ঋণের প্রভাবে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক অর্থাৎ জুন মাস শেষে মূলধন ঘাটতি মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে ১১টি ব্যাংক। এই সময়ে এসব ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।

এর মধ্যে সরকারি ও বিশেষায়িত খাতের ৭টি, বেসরকারি খাতের তিনটি ও বিদেশি একটি ব্যাংক রয়েছে। সরকারি ব্যাংকের মধ্যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে (মার্চ-জুন) মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১২ হাজার ৪২৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা, যা ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এর আগের প্রান্তিক অর্থাৎ জুন মাস শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, যা ওই সময়ের বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। অন্যদিকে গত জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে ১২টি ব্যাংক তাদের প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণ করতে পারেনি। এর মধ্যে ৮টিই বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক রয়েছে। মূলধন ঘাটতি বেড়ে যাওয়া ব্যাংকগুলো হচ্ছে, জনতা, কৃষি, রূপালী, বেসিক, বাংলাদেশ কৃষি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেসরকারি খাতের এবি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান।

রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের ঘাটতি গত মার্চ শেষে ১ হাজার ৫৪ কোটি টাকা হলেও এবারে তাদের ঘাটতি কমে দাঁড়িয়েছে ৪৫৬ কোটি টাকা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম বলেন, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রায় ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায় করা হয়েছে। গত বছরজুড়ে আদায় করা হয়েছিল প্রায় হাজার কোটি টাকা।

 

 
Electronic Paper