শার্শায় ধর্ষণ অভিযোগে প্রত্যাহার
মামলায় নেই এসআইয়ের নাম
যশোর প্রতিনিধি
🕐 ১১:০৯ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৯
ধর্ষণের অভিযোগে যশোরের শার্শা থানার এসআই খাইরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে নিলেও তাকে মামলায় আসামি করা হয়নি। মাদক মামলায় আটক স্বামীকে জামিন পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে এক নারীর কাছে টাকা দাবি করে না পেয়ে তাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এসআই খাইরুলের নামে। পরে তাকে প্রত্যাহার করা হয়।
গত মঙ্গলবার সকালে যশোর সদর হাসপাতালে ওই নারীর কাছ থেকেই ধর্ষণের অভিযোগের বিষয়টি সাংবাদিকরা জানতে পারেন। হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে পুলিশ সুপার ওই নারীর অভিযোগ শুনে শার্শা থানার ওসিকে তদন্ত করতে বলেন। এরপর রাতে শার্শা থানায় এসআই খাইরুলের নাম বাদ দিয়ে অজ্ঞাতনামা একজনসহ চারজনকে আসামি করে মামলা নথিভুক্ত করা হয়। এ বিষয়ে শার্শা থানার ওসি মশিউর রহমানের ভাষ্য, এসআই খাইরুলকে থানায় ওই নারীর মুখোমুখি করা হলেও তিনি তাকে শনাক্ত করতে পারেননি। এ কারণে তার নাম মামলায় রাখা হয়নি।
গত মঙ্গলবার সকালে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ওই নারী সাংবাদিকদের বলেন, নয় দিন আগে রাত ১১টার দিকে এসআই খাইরুল তার স্বামীকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে আটক করে নিয়ে যান। পরদিন সকালে তিনি জানতে পারেন তার স্বামীকে ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক দেখিয়ে মামলা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, গত সোমবার রাত আড়াইটার দিকে এসআই খাইরুলসহ চারজন তার বাড়িতে এসে ডেকে দরজা খুলতে বলেন। তিনি খাইরুলের সঙ্গে তার গ্রামের দুই ব্যক্তিকে দেখে দরজা খোলেন।
খাইরুল ও তার গ্রামের কামারুল ঘরে ঢোকেন। ওই নারীর অভিযোগ, সহজে তার স্বামীর জামিনের প্রস্তাব দিয়ে বিনিময়ে তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন খাইরুল। তিনি রাজি না হলে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে খাইরুল ও কামারুল তাকে ধর্ষণ করেন। এ সময় তার গ্রামের লতিফ ও কাদের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালে এসে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে অভিযোগ করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার অনুরোধ জানান। তার সঙ্গে পুলিশ না থাকায় অপারগতা প্রকাশের পরও তিনি বারবার একই অনুরোধ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি মুনিরুউজ্জামানকে বিষয়টি জানালে তিনি গিয়ে ওই নারীকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যান। শার্শা থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, সেখানে এসআই খাইরুলকে ওই নারীর সামনে হাজির করা হলে তিনি বলেন, ওই রাতে যারা তার বাড়িতে গিয়েছিল তাদের মধ্যে এই ব্যক্তি ছিলেন না। তবে যারা ছিলেন তারা বারবার একজনকে দারোগা খাইরুল নামে ডাকছিলেন।
ঘটনাটির পেছনে কেউ ইন্ধন জোগাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, মামলার এজাহারে এসআই কামরুলের নাম রাখা হয়নি। তবে অজ্ঞাতনামা আরেকজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার পর মঙ্গলবার রাতেই কামারুল, লতিফ ও কাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, ওই নারীর কাছ থেকে তিনি অভিযোগ শুনেছেন। বিষয়টি অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই নারীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আবার যশোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরিফ আহমেদ জানান, তার শরীরে আঁচড়ের চিহ্ন দেখা গেছে। তবে ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই খাইরুল বলেন, ওই নারীর স্বামীকে আটক করেছি, তবে সোমবার রাতে তার বাড়িতে যাইনি। কামারুল নামে কাউকেও চিনি না।