ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বন্যায় গাইবান্ধায় মৎস্য খাতে ক্ষতি ২৯ কোটি

জাহিদ খন্দকার, গাইবান্ধা
🕐 ১:২৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৯

গাইবান্ধায় মাছ চাষে স্বাবলম্বী হতে গিয়ে এ বছর পথে বসেছেন জেলার হাজার হাজার জেলে। বন্যার পানির তোড়ে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় মাত্র এক ঘণ্টায় ভেসে গেছে তাদের সব স্বপ্ন। এখন চরম দুর্দিন চলছে তাদের। সংসারে আর্থিক টানাপোড়েনের মাঝেও মাছের প্রতি ছিল চাষিদের আলাদা ভালোবাসা। তাই নিজেরা না খেলেও প্রতিদিন মাছের খাওয়া নিশ্চিত করতেন। বন্যার পানিতে খামার ভেসে যাওয়ায় এ বছর এই তাদের দুর্দিন চলছে। এ অবস্থায় কেউ কেউ গরু-ছাগল বিক্রি করে আবারও মাছ চাষ করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। কেউবা ছেলেমেয়ের লেখাপাড়ার খরচ ও সংসার চালাতে জমি বিক্রির কথা ভাবছেন।

বোনারপাড়া ইউনিয়নের শিমুলতাইড় গ্রামের সাজু মিয়া জানান, এ বছর বন্যায় তার তেলিয়ান বিলের মাছের প্রজেক্টে ২০ লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। বড় আকারের মাছ ছাড়াও ২ থেকে ৩ হাজার মণ পোনা মাছ ভেসে গেছে। এতে মূলধন হারিয়ে এখন নিঃস্ব জীবন কাটাচ্ছেন। আগামী ১০ বছরেও এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না। কিন্তু এখনও মেলেনি সরকারি কোনো সহযোগিতা।

যাদুরতাইর গ্রামের মাছচাষি রোস্তম আলী মন্ডল জানান, পাঁচ একর জমিতে মাছ চাষ করে সংসার ভালই চলছিল। কিন্তু এ বছর বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছে তাতে জমি বিক্রি করে সংসার চালাতে হবে। অন্য কোন পথ নেই। একই চিত্র ওই গ্রামের মজিবর রহমানেরও।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল দাইয়ান জানান, বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি নিরসনে পরবর্তী পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় জেলায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও মৎস্য সংকট নিরসনে চাষিদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

গাইবান্ধা জেলা মৎস্য অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবারের বন্যায় জেলার সাতটি উপজেলায় ৭ হাজার ৫০টি পুকুর ও মৎস্য খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৬ হাজার ২৯০টি পুকুর এবং ৭৬০টি মৎস্য খামার রয়েছে। বন্যায় মৎস্য খামারের ২ হাজার ৬০ মে. টন মাছ এবং ১ কোটি ১১ লাখ পোনা ভেসে গেছে।

এছাড়া অবকাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৬০ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছর বন্যার পানিতে ডুবে ৯ জন মারা গেছেন এবং ৩৫ হাজার ৯১৩টি পরিবারের এক লাখ ৩৪ হাজার ৫৯০ জন সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত এবং এক লাখ ১২ হাজার ৮৫২টি পরিবারের ৪ লাখ ৬২ হাজার ৯০৭ জন আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

 
Electronic Paper