ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আসামে এনআরসি তালিকা প্রকাশ

আমাদের কূটনৈতিকভাবে তৎপর হতে হবে

সম্পাদকীয়-১
🕐 ৮:৫০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩১, ২০১৯

বর্তমান বিশ্বে অভিবাসীদের নিয়ে অনেক রাষ্ট্রই নানাবিধ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। মূলত নিজ দেশের নাগরিকদের অধিকার যথাযথভাবে সমুন্নত রাখতেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে অভিবাসনের ধারণাটি স্পর্শকাতর বিষয়। কারণ মুক্ত বিশ্বের স্রোতধারায় অভিবাসীদের বিষয়টি চাইলেই অস্বীকার করা যায় না। আর অভিবাসী ছাঁটাই করতে গিয়েও দেশের প্রকৃত নাগরিকদের অভিবাসী সাব্যস্ত করার বিষয়ও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, গতকাল শনিবার নির্ধারিত সময়েই প্রকাশ হলো আসামের জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) চূড়ান্ত তালিকা। নতুন এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ৩ কোটি ১১ লাখ মানুষ। বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ। এনআরসি দফতর সূত্রে এমনটি বলা হয়েছে, অনেকেই এনআরসির পদ্ধতি নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্য বিজেপির বেশ ক’জন মন্ত্রীও। তাদের আশঙ্কা, বহু বাঙালি হিন্দুর নাম তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে। অনেক বিদেশি এ তালিকায় ঢুকে পড়তে পারেন বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত সপ্তাহেই ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে এনআরসি নিয়ে বৈঠক করেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল। মুখ্যমন্ত্রী জানান, তালিকা থেকে বিদেশিদের বাদ দিতে কেন্দ্র আইন আনারও চিন্তাভাবনা করছে যাতে সঠিক নাগরিকরা তালিকা থেকে বাদ না পড়েন। আসামের মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মাও এই এনআরসি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, বৈধ নাগরিকদের চিহ্নিত করা এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বাতিল করার ক্ষেত্রে এ তালিকা কতটা সহযোগী হবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ লাগোয়া জেলা দক্ষিণ সালমারা ও ধুবড়িতে তালিকা থেকে বাদ পড়ার হার সর্বনিম্ন। অথচ ভূমিপুত্র জেলায় প্রচুর মানুষের নাম বাদ পড়েছে। আমরা এই তালিকায় ভরসা রাখছি না।’

সার্বিক দিক বিবেচনায় বোঝা যাচ্ছে আসামের এ নাগরিক তালিকাটি প্রশ্নবিদ্ধ। ইতোমধ্যে সেখানে তালিকায় নাম না থাকার ফলে হতাশায় আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। সরকারের পক্ষ থেকে আপিলের সুযোগ থাকার কথা বলার পরও দুশ্চিন্তার রেশ ছড়িয়ে পড়েছে আসামজুড়ে। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমাদেরও নির্ভার থাকার সুযোগ নেই। কারণ, তালিকা থেকে বাদ পড়া মুসলিম বাঙালিদের যে বাংলাদেশি বলে অতীতের মতো আমাদের দেশে ‘পুশ ইনে’র চেষ্টা হতে পারে, সে আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

এক্ষেত্রে আমাদের সরকারের উচিত কূটনৈতিকভাবে বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। কেননা এমনিতে সাড়ে ১২ লাখ রোহিঙ্গাদের ভার আমাদের বহন করতে হচ্ছে। এখন যদি নতুন করে কোনো সংকটের মুখোমুখি হতে হয় তাহলে সেটি মোটেও সুখকর হবে না। আমরা এক্ষেত্রে সরকারের কূটনৈতিক দূরদর্শিতা প্রত্যাশা করছি।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper