ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আউশের ফলন ভালো ন্যায্য দাম মিলছে না

জয়নুল আবেদীন, আমতলী (বরগুনা)
🕐 ৫:২১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩১, ২০১৯

‘কত কষ্ট হইর্যা (করে) এ বচ্ছর আউশ ধান দিছি (চাষ করা)। ধান মোডামুডি ভালোই অইছে। কিন্তু আডে (হাটে) ধানের দাম কম। কি হরমু (করব) অনেক টাহা লছ দিতে অইবে। ধার হইর্যা (করে) জমি চইছি (চাষ করেছি)। কিদ্ধা (কিভাবে) হেই টাহা দিমু কইতে পারি না।’ এভাবেই কথাগুলো বলেছেন বরগুনার আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের কাউনিয়া গ্রামের কৃষক কামাল সিফাই।

এবার আমতলীতে ভালো ফলন হলেও বাজারে ধানের দাম কম থাকায় দুচিন্তায় পড়েছেন কৃষক। ধানের দাম কম থাকায় লাভবান হওয়ায় সম্ভবনা সেই নেই-ই বরং একর প্রতি পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা লোকসান দিতে হবে। চালের দাম কম থাকায় মিল মালিকরা ধান কিনছেন না। তাই বাজারে ধানের দাম কম বলে জানান আড়ৎদাররা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আমতলীতে আউশ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়ছিল ১১ হাজার ৭৬০ হেক্টর। অর্জিত হয়েছে আট হাজার ৯৯০ হেক্টর। ধানের দাম কম থাকায় কৃষক জমি চাষাবাদে আগ্রহ হারিয়েছেন। তাই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। গত বছর ছিল ১০ হাজার ৫০০ হেক্টর। গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের আবাদ কম হয়েছে। বাজারে প্রতি মণ ধান ৪২০ থেকে ৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

আড়পাঙ্গাশিয়া গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এ বছর দুই একর জমিতে ব্রি-৪৮ জাতের আউশ ধানের চাষ করেছি। উৎপাদন খরচ হয়েছে ৪১ হাজার টাকা। ওই জমিতে ৬০ মণ ধান পেয়েছি। বাজারে ৪৫০ টাকা মণ ধরে কিছু ধান বিক্রি করেছি। ক্রেতা না থাকায় বাকি ধান বিক্রি করতে পারিনি। বাজারে ধানের দাম কম থাকায় এ লোকসান গুণতে হবে।

ধান-চাল আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন বলেন, বাজারে দুই ধরনের ধান রয়েছে। প্রকার ভেদে ধানের মণ ৪০০-৫০০ টাকা। বাজারে ধানের দাম কম থাকায় কৃষকদের লোকসান হবে। কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, চাঁদপুর, দিনাজপুর, গাছুরিয়া মিল ও দক্ষিণাঞ্চলের পাঁচটি অটোরাইস মিল মালিকরা ধান ক্রয় করছে না। তারা ধান ক্রয় না করায় বাজারে দাম কমে গেছে। সরকারও ধান ক্রয় করছে না। যদি ধান ক্রয় করতো তাহলে বাজারে ধানের দাম বেশি থাকতো।

আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, এ বছর আউশ ধানের ফলন ভালো হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে বাজারে ধানের দাম কম থাকায় কৃষকদের সমস্যা হবে।

 
Electronic Paper