ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসায় হোমিও প্রতিবিধান

ডা. মাজেদ হোসাইন
🕐 ১১:২০ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৩০, ২০১৯

থ্যালাসেমিয়া রক্তের এমন একটি মারাত্মক রোগ যা শিশুরা বংশগতভাবে তাদের পিতা-মাতা থেকে পেয়ে থাকে। বিজ্ঞানীদের মতে, সাধারণত চাচাত ভাই-বোনদের মধ্যে বিয়ে হলে সন্তানদের থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এ রোগীদের রক্তের লাল কণিকা তাড়াতাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে তাদের রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম থাকে এবং আয়রণের পরিমাণ বেড়ে যায়।

এ কারণে এদের ২০ থেকে ৩০ দিন পরপর রক্ত দিতে হয় এবং শরীর থেকে অতিরিক্ত আয়রন বের করার জন্য ওষুধ খেতে হয়। খুব ছোট শিশুদের মধ্যে রক্তশূন্যতা, জ্বর, শারীরিক বৃদ্ধি না হওয়া, প্লীহা বড় হয়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখে থ্যালাসেমিয়া রোগ সন্দেহ করেন এবং রক্তের বিশেষ মাইক্রোস্কোপিক পরীক্ষার মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হন। যেহেতু এ রোগের চিকিৎসায় প্রচুর টাকা খরচ হয়, সেহেতু মধ্যবিত্ত বা দরিদ্ররা এ রোগে আক্রান্ত হলে সর্বস্বান্ত হতে লাগে না। এত পয়সা খরচ করেও এসব শিশুদের সাধারণত বিশ-ত্রিশ বছরের বেশি বাঁচানো যায় না।

ধ্বংসপ্রাপ্ত লাল কণিকা থেকে নির্গত আয়রনের লিভার, হৎপিণ্ড এবং পেনক্রিয়াসে জমা হতে থাকে একাংশ শরীরের অতিরিক্ত আয়রণের বিষক্রিয়ায় এরা লিভার সিরোসিস, হার্ট ফেইলিওর, প্লীহা বড় হওয়া ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হয় এবং এদের শরীরে যৌবনের আগমন ঘটে বিলম্বে। শারীরিক বৃদ্ধিও তেমন একটা ঘটে না। এটি একটি মারাত্মক জেনেটিক ডিজিজ বলে খুব একটা নিরাময় হয় না বলে সবাই বিশ্বাস করত। ইদানীং বিভিন্ন দেশের অনেক হোমিও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অগণিত থ্যালাসিমিয়া রোগীকে আরোগ্য করার দাবি করেছেন। যাদের ডিসচার্জ করার পর পাঁচ ছয় বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।

হোমিও স্পেশালিস্টদের মতে, শতকরা ৫০ ভাগ থ্যালাসেমিয়া রোগীকে হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে পুরোপুরি রোগমুক্ত করা আল্লাহর রহমতে সম্ভব। অবশিষ্ট থ্যালাসেমিয়া রোগীরা পুরোপুরি রোগমুক্ত না হলেও হোমিও চিকিৎসায় তাদের অবস্থা এতটাই উন্নত হয়, অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা নিলে মাসে বা বছরে একবার রক্ত নিলেই চলে।

হোমিও প্রতিবিধান : রোগ নয় রোগীর চিকিৎসা করা হয়। এজন্য অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসকরা যেই সব ওষুধ ব্যবহার করেন। সিয়ানোথাস, এসিড সালফ, ফেরাম মেট, আর্সেনিক এল্ব, অ্যান্ডাগ্রাফিস, চায়না, কার্ডুয়াস মেরি, ক্যালকেরিয়া ফ্লোর, ইউক্যালিপটাস, আলফালফা, থুজা, মেডোরিনামসহ আরও ওষুধ লক্ষণের ওপর আসতে পারে। অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসক ছাড়া ওষুধ নিজে নিজে ব্যবহার করলে রোগ আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

ডা. মাজেদ হোসাইন
কো-চেয়ারম্যান, হোমিওবিজ্ঞান গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

 
Electronic Paper