ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

হাড় ক্ষয় নিরাময়ে হোমিও চিকিৎসা

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
🕐 ১:০৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০১৯

হাড় ক্ষয় মূলত একটি সমস্যা, যা হাড়ের মূল গঠন উপাদান অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ার কারণে বা উভয় কারণেই ঘটতে পারে। এর প্রভাবে হাড় স্বাভাবিকের তুলনায় অধিক পরিমাণে দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে যায় এবং সামান্য আঘাতেই হাড় ভেঙে যেতে পারে।

কারণগুলো- যখন শরীরের হাড় স্বাভাবিকের চেয়ে কম মিনারেল ধারণ করে তখন তা কম শক্তিশালী থাকে। সেই সঙ্গে ভেতরের ক্ষয়ের পরিমাণও বাড়ে। তরুণদের ক্ষেত্রে নতুন হাড় তৈরির মাত্রা হাড় ক্ষয়ের চেয়ে বেশি এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে হাড় ক্ষয়ের মাত্রা হাড় তৈরির চেয়ে বেশি। তারপরও হাড় ক্ষয়জনিত ক্ষতি অনেক অল্প বয়সেও শুরু হতে পারে। কারণ হাড়ের সর্বোচ্চ ঘনত্ব সাধারণত ২৫ বছরের মধ্যে চূড়ান্ত মাত্রায় পৌঁছে। কাজেই এ সময়ের ভেতরে শক্তিশালী হাড় গঠন খুব জরুরি, যাতে হাড় পরবর্তী জীবনে শক্তিশালী থাকে।

যে কারণে হাড় ক্ষয়ের প্রবণতা বাড়ে : ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সের পুরুষের তুলনায় মহিলাদের অবস্থান অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। পরিবারের অন্য সদস্যদের হাড় ক্ষয়ের ইতিহাস থাকা, জীবনের তৃতীয় দশকে সর্বোচ্চ হাড়ের ঘনত্ব কম থাকা, অল্প বয়সে মাসিক বন্ধ হওয়া বা স্বল্প ওজন এবং কায়িক পরিশ্রমহীনতা অতিমাত্রায় কোমল পানীয় গ্রহণ; হেপারিন, কর্টিক, খিঁচুনি রোধক ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন; হাইপার করটিসনিসম, গোনাডাল হরমোনের স্বল্পতা, থাইরয়েড ও প্যারাথাইরয়েড হরমোনের আধিক্য, হাড়ে ক্যান্সার ছড়িয়ে যাওয়া ইত্যাদি এই ঝুঁকির কারণ।

হাড় ক্ষয়ের লক্ষণ : প্রাথমিক অবস্থায় কোনো লক্ষণ প্রকাশ না করে পরে ক্ষয়জনিত কিছু কিছু লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। শরীরের বিভিন্ন মাংসপেশি এবং হাড়ের ভোঁতা ব্যথা বিশেষত শরীরের ওজন বহনকারী জোড়া যেমন মেরুদণ্ডের হাড়, কোমর অথবা ঘাড়ে ব্যথা; শরীরের পিছনের অংশে মেরুদণ্ডের তীব্র ব্যথা, শরীরের উচ্চতা হ্রাস পাওয়া, শারীরিক গঠন বা উচ্চতার বিকৃতি বা বিচ্যুতি, স্বল্প আঘাত বা দুর্ঘটনাতেই মেরুদ- ইত্যাদি।

রোগ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা : শরীরের ক্ষতিগ্রস্ত অংশের এক্স-রে বোন মিনারেল ডেনসিটি।

প্রতিরোধে করণীয় : ন্যাশনাল অস্টিওপোরোসিস ফাউন্ডেশনের গাইড লাইন অনুযায়ী অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে ত্রিশোর্ধ্ব প্রতিটি মানুষের প্রতিদিন ন্যূনতম ১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়ামও ৪০০-৮০০ আইইউ ভিটামিন-ডি গ্রহণ, প্রতিদিন মাংসপেশি সুদৃঢ়করণ এবং ওজন উত্তোলক ব্যায়াম, নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম, ধূমপান সম্পূর্ণরূপে বর্জন, অতিরিক্ত মদ্যপান পরিহার, খাদ্যভ্যাস নিয়ন্ত্রণ ও অতিরিক্ত ওজন হ্রাস।

হোমিও প্রতিবিধান : রোগ নয় রোগীকে চিকিৎসা করা হয়। এজন্য একজন অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসককে রোগীর পুরো লক্ষণ নির্বাচন করে হাড় ক্ষয়ের রোগীর চিকিৎসা দিতে পারলে তাহলে আল্লাহর রহমতে এসব রোগী হোমিওতে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব।

অভিজ্ঞ চিকিৎসক ঘন যেসব ওষুধ নির্বাচন করে থাকেন : এরাম ট্রাইফাইলাম, ক্যালমিয়া, ন্যাজা, জিমকাম মেট, আয়োডাম, প্যারিস, এসিড ফ্লুয়োরিক, লাইসিন, স্ট্রামোনিয়াম, ল্যাকেসিস, আর্নিকা, কোবাল্টাম, সাইলিসিয়া, রাস টক্সসহ আরও অনেক ওষুধ লক্ষণের ওপর আসতে পারে।


ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
কো-চেয়ারম্যান, হোমিওবিজ্ঞান গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

 
Electronic Paper