ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অগ্রযাত্রার ৫৮ বছর

হাবিবুর রনি
🕐 ৬:০৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৫, ২০১৯

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ৫৯ বছরে পা দিয়েছে। ১৮ আগস্ট, ১৯৬১ সালে ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম প্রান্তে ১২৫০ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে ৬টি অনুষদে কৃষিবিষয়ক পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান আহরণ করার সুযোগ পাচ্ছেন প্রায় ৪,২৯৬ জন শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্য ও অগ্রযাত্রার ৫৮ বছর সম্পর্কে কী ভাবছেন
সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমান তরুণ শিক্ষকরা। লিখেছেন- হাবিবুর রনি

আরও সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন

নুরুজ্জামান সরকার

ছাত্রজীবন ও কর্মজীবন মিলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমার প্রায় ১০ বছরের পথচলা। দেখতে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয় ৫৯তম বছরে পা রাখল। বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসানের নেতৃত্বে শত প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতাকে উপেক্ষা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়।

সময়ের পরিক্রমায় আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ও বাকৃবিকে আরও সমৃদ্ধ করতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত গবেষণা বরাদ্দ, অত্যাধুনিক গবেষণাগার নির্মাণ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শ্রেণিকক্ষ, ডিজিটাল গ্রন্থাগার, সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের ডিজিটালাইজডকরণ, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের যথাযথ আবাসন ব্যবস্থা, পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন, আবাসিক হলে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিতকরণ, কোর্স কারিকুলাম হালনাগাদকরণের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আইডিয়া এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম, কোলাবোরেটিভ রিসার্চ এবং এমওইউকরণের মাধ্যমে বাকৃবিকে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব বলে আমি মনে করি।

সহকারী অধ্যাপক, কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ

 

শিক্ষার্থীদের গবেষণামুখী করতে হবে
মোহাম্মদ রাসেল

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১১ সালের এক স্নিগ্ধ প্রভাতে ছাত্র হিসেবে আমার যাত্রা। একজন ছাত্র হিসেবে যা কিছু চেয়েছি তার প্রায় সবই দিয়েছে এই প্রাণের বিশ^বিদ্যালয় আমাকে। তবুও আমাদের এখনো কিছু ঘাটতি রয়ে গেছে। একজন শিক্ষক হিসেবে আমি মনে করি বিশ^বিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে হলে সেগুলো নিরসন করা খুব জরুরি। বিশেষ করে আবাসন ব্যবস্থার দিকে নজর দেওয়া দরকার। শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বহিঃমুখী জ্ঞান প্রদান ও উপস্থাপনায় দক্ষ করে তোলা বর্তমানে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে টিকে থাকার জন্য খুবই প্রয়োজন। সঠিক মোটিভেশনের অভাবে একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থী ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে না।

সেজন্য বেশি বেশি চাকরি ও উচ্চশিক্ষা সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সেমিনার এবং ওয়ার্কশপের আয়োজন এবং শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কোয়ান্টিটি নয় বরং কোয়ালিটির দিকে ধাবিত করা দরকার এবং সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের অধিকতর গবেষণামুখী করে তোলার কোনো বিকল্প নেই এই মুহূর্তে।

সহকারী অধ্যাপক, কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ

 

যোগ্য কৃষি গ্রাজুয়েট তৈরি করে চলেছে
মাসুদ রানা

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শুরু করে অদ্যাবধি স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানটি দক্ষ, মেধাবী ও যোগ্য কৃষি গ্রাজুয়েট তৈরি করে চলেছে যারা তাদের যোগ্যতা, মেধা এবং নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা গবেষকরা নতুন নতুন টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের মাঝে সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিম-লে সুনাম অক্ষুণ্ন রাখছে।

প্রকৃতি কন্যাখ্যাত মাতৃসম এই বিশ্ববিদ্যালয় আগামী দিনগুলোতে কৃষির বৈল্পবিক পরিবর্তন সাধন ও যুগোপযোগী আধুনিক কৃষি শিক্ষা ব্যবস্থা এবং দেশের গ্রামীণ কৃষক জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

প্রভাষক, কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগ

 

খাদ্য-নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে অবদান রাখছে
মোহাম্মদ রাগীব মুনীফ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আধুনিক কৃষিশিক্ষা, গবেষণা, টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি, দারিদ্র্যবিমোচন, খাদ্য-নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সুদীপ্ত পদচারণা ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

ফসল, শাক-সবজি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের বিভিন্ন জাত উদ্ভাবন, কৃত্রিম প্রজনন, প্রাণির হিমায়িত ভ্রুণ সংরক্ষণ ও স্থানান্তর, বিভিন্ন রোগের শনাক্তকারী প্রযুক্তি ও প্রতিষেধক টিকা উদ্ভাবন, কমিউনিটি ভিত্তিক মাঠ পর্যায়ে ভেটেরিনারি ও কৃষি সম্প্রসারণ সেবা প্রদান, হাওর ও চর উন্নয়নের জন্য হাওর ও চর উন্নয়ন ইনস্টিটিউট স্থাপন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়কে করেছে দেশে-বিদেশে সবার কাছে প্রশংসনীয়।

বর্তমান উপাচার্য মহোদয় প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসানের যোগ্য ও তেজোদীপ্ত নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়টি এগিয়ে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আগামী ২০২০ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী ‘স্বাস্থ্য বীমা’র আওতায় আসবে।

প্রভাষক, সার্জারি ও অবস্টেট্রিক্স বিভাগ

 
Electronic Paper