পবিত্র ঈদুল আজহা
ত্যাগ হোক কোরবানির শিক্ষা
সম্পাদকীয় ডেস্ক
🕐 ৭:০৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১০, ২০১৯
আগামীকাল পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঈদ এটি। প্রতিবছর আরবি জিলহজ মাসের ১০ তারিখে উদযাপিত হয় পবিত্র কোরবানির উৎসব। পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে নিজেদের ভেতরের পশুবিনাশ ঈদুল আজহার প্রধান উদ্দেশ্য। আত্মত্যাগ, শুদ্ধি, শান্তি-সৌহার্দ্য এবং আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে এই ঈদ। এই দিন মুসল্লিরা নামাজ আদায় করে কোরবানি দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার অধ্যায় শুরু করবেন। পবিত্র ঈদুল আজহার উদ্দেশ্যের ধারা চলমান রেখে শান্তির ধর্ম ইসলাম তার স্থান সুপ্রতিষ্ঠিত রেখেছে। মূলত ত্যাগই এই ঈদের বিশেষত্ব।
পবিত্র এই ঈদে মুসলমানরা যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানির ব্যবস্থা করবেন। মসজিদে মহান আল্লাহর দরবারে নামাজ আদায় করে ঈদের অনুষ্ঠান শুরু হবে। সর্বশক্তিমান আল্লাহ প্রদত্ত পবিত্র কোরআন মজিদে ‘কুরবান’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে কয়েকবার। আর, মহানবী হজরত মুহম্মদ (সা.)-এর বাণী হাদিসে ‘কুরবান’ শব্দের বদলে ব্যবহার করা হয়েছে ‘উজহিয়া’ বা ‘জাহিয়াহ’। কুরবান শব্দের অর্থ নৈকট্য লাভ করা বা কোনো কিছুর কাছাকাছি থাকা। আর জাহিয়াহ শব্দের অর্থ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জবেহ করা। তাই, কোরবানির দিন পশু জবাইয়ের মাধ্যমে প্রত্যেকটি মানুষ পশু প্রবৃত্তি জবাই করে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে। এই জন্যই এই ঈদের নাম ঈদুল আজহা।
পৃথিবীর প্রথম মানব হজরত আদমের (আ.) আমল থেকেই এই প্রথা প্রচলিত। অন্যান্য ধর্মেও কোরবানির বিধান রয়েছে। রীতি আলাদা হলেও মূল উদ্দেশ্য অভিন্ন। ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী, মহান আল্লাহর নবী হজরত ইব্রাহিমের (আ.) আমল থেকেই কোরবানি সমৃদ্ধি লাভ করে। সে সময় মহানুভব আল্লাহর নির্দেশে হজরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইলকে (আ.) কোরবানি দিতে গেলে আশীর্বাদস্বরূপ তার পুত্র বেহেশতি দুম্বায় রূপ নেয়। কঠোর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন হজরত ইব্রাহিম (আ.)। এটি পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা। সেই থেকেই মানুষ তার পথ অনুসরণের মাধ্যমে নিজের পশুত্বের খারাপ গুণগুলো দূরীভূত করার চেষ্টা করছে।
আগামীকাল উদযাপিত হচ্ছে মহান ঈদুল আজহা। এ দিন বাংলাদেশে এক কোটিরও বেশি পশু কোরবানি হতে চলেছে। ইসলামিক বিধান অনুযায়ী কোরবানির পবিত্র মাংস ভাগাভাগি করে নেবে সবাই। এতে মানব জাতির মধ্যে সম্প্রীতি বৃদ্ধি পাবে নিঃসন্দেহে। কোরবানির উদ্দেশেই যেহেতু এই ঈদ, তাই এই রীতি ঘিরে যেন কোনো অনিয়ম বিশৃঙ্খলা না হয় সে খেয়াল রাখতে হবে সবাইকেই। ঈদের এই আনন্দের মধ্যেও ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কে আছে সবাই। ভয়াবহ এই জ্বর থেকে মুক্তি এবং মশা নিধনে সচেতনতাসহ একে অপরকে সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে সবাইকে।
ঈদের নামাজ আদায়ের সময় দেশ থেকে দুর্যোগ-দুর্ভোগ দূরীভূত হতেও দোয়া চাইতে হবে। একই সঙ্গে আমরা চাই, পবিত্র ঈদুল আজহায় আত্মত্যাগ এবং সম্প্রীতির শিক্ষা বছরব্যাপী অমলিন থাকবে। এই ঈদের আনন্দ বর্ষিত হোক প্রাণে প্রাণে। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228