ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রাজধানীর হাটে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু

ক্রেতার অপেক্ষায় বিক্রেতা

এম কবীর
🕐 ১০:৪৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ০৭, ২০১৯

পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোরবানির পশু নিয়ে ভিড় জমাচ্ছেন বিভিন্ন ক্রেতা ও খামারিরা। সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত অস্থায়ী হাটে ক্রেতাদের সংখ্যা তেমন দেখা না গেলেও পরিবারের ছোট বড় সদস্যদের নিয়ে দলবেঁধে বিভিন্ন হাট ঘুরে কোরবানির পশু দেখছেন অনেকেই। পাশাপাশি পশুর দরদামও করতে দেখা যাচ্ছে। ঈদের যেহেতু আর মাত্র চার দিন বাকি তাই দরদাম বোঝার চেষ্টা করছেন তারা। অস্থায়ী হাটগুলোতে গরু, ছাগল, মহিষ, উট ও ভেড়াসহ পর্যাপ্ত কোরবানির পশু ইতোমধ্যে উঠে গেলেও বেচাকেনা এখনো জমে ওঠেনি। হাটগুলোতে এখন ক্রেতার চেয়েও দর্শনার্থী বেশি।

রাজধানীর গাবতলী, উত্তরা, রামপুরা, তেজগাঁওয়ের কয়েকটি হাট ঘুরে সরেজমিনে এসব দৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। গাবতলীর হাটে ঘুরতে আসা নাজমুল নামে এক ক্রেতা জানান, হাটগুলোতে প্রচুর সংখ্যক কোরবানির পশু আসা শুরু করেছে। বিভিন্ন হাট ঘুরে দরদাম করছি। কিন্তু ঈদের আরও বেশ কয়েকদিন বাকি থাকায় এখনই পশু কেনার সিদ্ধান্ত নেয়নি। তারপরও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গরু দেখতে এসেছি যদি দরদামে মিলে তাহলে কেনার সম্ভাবনার কথাও জানান তিনি। মিরপুর থকে আসা মাসুদুর রহমান জানান, এ বছর এই হাটে দেশি অনেক গরু আসছে। তবে বিক্রেতারা গরুর দাম বেশি হাঁকাচ্ছেন। অন্য বছরের চেয়ে দাম একটু বেশি বলেও মনে করেন তিনি। ঈদের যেহেতু কয়েকদিন বাকি আছে তাই তাড়াহুড়া নেই বলেও জানান তিনি। গরু পছন্দ হলেই দরদাম করে কিনে নিয়ে যাবেন তিনি। রাজধানীর অন্যান্য হাটেও একই ধরনের চিত্র দেখা যায়। বিক্রেতারা বলছেন, হাটে এখন যারা আসছেন তারা শুধু দাম জেনেই চলে যাচ্ছেন। কেউ কিনছেন না। তবে আগামীকাল থেকে ক্রেতা পাওয়া যাবে। হয়তো আগামী ২-১ দিনের মধ্যে হাট পুরোপুরি জমে উঠবে। পশুর দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বেশি হাঁকাচ্ছেন ক্রেতাদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে বিক্রেতারা জানান, পশুর খাদ্যের দাম বেশি থাকায় খামারিদের পশু লালন পালনে খরচ বেশি হচ্ছে। তাই মূল্য একটু বেশি। তা ছাড়া ঢাকায় পশুগুলো নিয়ে আসতে খরচের পরিমাণ একটু বেশি হয়। পশুরহাট জমে না উঠলেও অনেকেই বেশ কয়েকদিন আগ থেকেই গবাদিপশু নিয়ে হাটে চলে এসেছেন। হাট শুরুর আগেই চলে আসা নিয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, হাটে একটু তাড়াতাড়ি করে আসার কারণ হচ্ছে, আর দুই এক দিনের মধ্যে সারা দেশ থেকে পশু এসে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে হাটগুলো। তখন রাস্তায় অনেক যানজট হয়। আর হাটে আসার পর দেখা যায় পছন্দমতো জায়গা পাওয়া যায় না। তাই আগে এসেছি এবং আগে এসে হাটের একদম ঢোকার জায়গাতেই স্থান পেয়েছি। যার ফলে এ হাটে যারাই আসুক না কেন আগে আমার গরুগুলোই চোখে পড়বে।

হাটের ইজারাদার ও এর সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সবাই দেশজুড়ে ডেঙ্গুর প্রভাবটি মাথায় রেখে সবাই হাটেই মশক নিধন অভিযান পরিচালনা করতেও দেখা যায়। সকাল বিকাল ফগার মেশিন দিয়ে মশার ওষুধ ছিটাতেও দেখা গেছে। তা ছাড়া অতিবৃষ্টি ও রোদ্রের কড়া তাপ থেকে গবাদিপশুকে রক্ষার জন্য বেশ কয়েকটি হাটে ত্রিপল দিয়ে বিশেষ প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে।

অন্যদিকে, রাজধানীর অনেক পশুরহাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছে তৎপর। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে হাটের মধ্যেই স্থাপন করা হয়েছে অস্থায়ী ক্যাম্প। প্রতিটি হাটেই নিরাপত্তায় রয়েছে একাধিক ওয়াচ টাওয়ার।

সারা দেশে প্রায় এক কোটি ১৮ লাখ কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর মজুদের পাশাপাশি কোরবানির হাটে স্বাস্থ্যসম্মত পশুর সরবরাহ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একাধিক মেডিকেল টিম ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের ব্যবস্থা করেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশন। ইতিমধ্যে সারা দেশে কোরবানিযোগ্য ৪৫ লাখ ৮২ হাজার গরু ও মহিষ, ৭২ লাখ ছাগল ও ভেড়া এবং ৬ হাজার ৫৬৩টি অন্যান্য পশুর প্রাপ্যতা নিশ্চিত করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। এবারের ঈদুল আজহায় এক কোটি ১০ লাখ গবাদিপশুর কোরবানি হতে পারে বলেও অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে।

 
Electronic Paper