ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চাচার লালু

হামীম রায়হান
🕐 ৬:২৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ০১, ২০১৯

আসাদ চাচা প্রতিবছর একটা বড় গরু কোরবানির হাটে তোলেন। সবার দৃষ্টি থাকে সেই গরুর দিকে। সেই গরুটা হয় বাজারের সেরা গরু। অনেক যত্ন করে গরুটা বড় করেন চাচা। কোনো ওষুধ খাওয়ান না। ফলে সবার আস্থা থাকে চাচার গরুর ওপর। আর এই গরু বেচা টাকা ও সামনের জমিনের সামান্য চাষের টাকা দিয়ে চলে চাচার সারা বছরের খরচ। এ বছরও চাচার একটা বড় গরু প্রস্তুত। এবারেরটা সবচেয়ে আকর্ষণীয় হবে। দেখতে যেমন লাল টুকটুকে গায়ের রং, তেমনি সুন্দর বাঁকানো দু’টি শিং। তাই চাচা আদর করে ষাঁড়টার নাম দিয়েছেন ‘লালু’। লালু’ বলে ডাক দিলেই ষাঁড়টা ‘হাম্বা হাম্বা’ বলে ডাক পাড়ে।

বাড়ির উঠানের কোণে লালু বাঁধা থাকে। এবারের বর্ষাটা বেশ একটু আগেই শুরু হয়েছে। সকালের নামাজ শেষে লালুকে চাচা বের করে আনেন। সকালের আলো বাতাস লাগার জন্য। সেদিন ভোর থেকেই আকাশ প্রচ- মেঘলা। তারপরও লালুকে বাইরে বাঁধেন। ভাবলেন একটু পর গোয়ালে ঢুকিয়ে ফেলবেন। লালুকে খেতে দিয়ে চাচা ঘরে খেতে গেলেন। মুহূর্তের মধ্যেই আকাশ আরও কালো করে বৃষ্টি নামে। চাচা ভাবেন আজতো লালুকে গোসল করানোর কথা। একটু পর গিয়ে খেয়ে উঠে গোয়ালে ঢুকাবেন। এই ভাবতে ভাবতে খাচ্ছিলেন।

হঠাৎ প্রচণ্ড জোরে বজ্রপাতে সারা ঘর থর থর করে কেঁপে ওঠে। আগুনের ফুলকি যেন আকাশ থেকে মাটিতে নেমে এলো। চাচা দৌড়ে ঘরের বাইরে এক অজানা ভয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন। এসেই যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল চাচার! হাউ মাউ করে চাচা কেঁদে উঠলেন! উঠানের কোণে নিথর দেহে পড়ে আছে লালু। পাহাড়সম দেহটা বজ্রের এক আঘাতেই শেষ। চোখের পলকেই চাচার সব স্বপ্নের ইতি। তার একমাত্র অবলম্বনখানা মাটিতে লুটিয়ে আছে। চাচার চোখের জলে সারা গাঁয়ে নামে শোকের মাতম।

সভাপতি
এগারজন, পটিয়া, চট্টগ্রাম।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper