সামাজিক ভীতি থেকে ডিপ্রেশন
হালরং ডেস্ক
🕐 ৩:২২ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০১৯
অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মিতা (ছদ্মনাম), বয়স ২০। সে প্রায়ই কিছু বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকে। কারণ সে অপরিচিত কারও সঙ্গে চোখে চোখ রেখে ঠিকভাবে কথা বলতে পারে না। কথা শুরু করার আগে প্রচ- ভয় এবং উদ্বেগ কাজ করতে থাকে। কি বলবে তা মনে মনে বার বার অনুশীলন করতে থাকে। তার মনে হয় নিশ্চয়ই সে ভুল কিছু বলে ফেলবে অথবা এমন কিছু করে ফেলবে যার জন্য অন্যরা খারাপ ভাবে নেবে বা হাসাহাসি করবে।
অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলা ছাড়াও সে যখন কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে যেমন, বিয়ে বাড়িতে যায় তখনো এই ধরনের সমস্যাগুলো প্রকট আকার ধারণ করে। তার মনে হয় যে সে কোনো কিছু ঠিকভাবে করতে পারবে না ফলে অন্যরা হাসি-ঠাট্টা করবে। সে কীভাবে খাচ্ছে, কীভাবে দাঁড়িয়ে আছে কিংবা কথা বলছে সেগুলো অন্যরা খেয়াল করবে। এর ফলে সে সব ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান পরিহার করে। কিংবা যদি উপস্থিত থাকেও তাহলে প্রচণ্ড ভয়ে থাকে যে কখন কি ভুল করে বসে।
তার এসব সমস্যার কারণে সে ক্লাসে ঠিকমতো কথা বলতে পারে না, প্রেজেন্টেশন দিতে পারে না। নতুন কারও সঙ্গে মিশতে পারে না। ফলে তার খুব বেশি বন্ধু নেই। প্রায় সময় একা একা থাকে। মিতার মধ্যে আমরা যে ধরনের সমস্যা দেখলাম সেগুলো মূলত সোশ্যাল এঞ্জাইটি ডিসঅর্ডার বা সামাজিক ভীতির লক্ষণ। এই ধরনের ব্যক্তিদের জীবন যাপন সবই স্বাভাবিক থাকে কিন্তু যখন কোনো সামাজিক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় তখনই সমস্যা দেখা দেয়।
সে কারণে ব্যক্তি পারতপক্ষে সামাজিক অনুষ্ঠানসমূহে কিংবা অপরিচিত মানুষের সামনে একদমই যায় না। এর ফলে তার জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। ব্যক্তি রাগ, বিরক্তি, হতাশা অথবা বিষণ্নতায় ভুগতে পারে। যেমন মিতার ক্ষেত্রে আমরা দেখলাম যে সে একা একা থাকার কারণে খুব একাকীত্বে ভোগে। এই ভয়, উদ্বেগ কিংবা সামাজিক পরিস্থিতি এড়িয়ে চলার লক্ষণসমূহ দীর্ঘদিন ধরে ব্যক্তির মধ্যে চলতে থাকে। আমরা লক্ষ্য করলে দেখব যে সেই সামাজিক পরিস্থিতির সঙ্গে ব্যক্তির এই ধরনের ভয় বা উদ্বেগ একদমই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। হয়তো সে কথা বললে অপর ব্যক্তি কিছুই মনে করত না।
কিংবা সে কীভাবে খাচ্ছে বা কথা বলছে কেউই খেয়াল করছে না বা খারাপভাবে নিচ্ছে না। এই ধরনের সমস্যা সাধারণত সাইকোথেরাপির বিভিন্ন টেকনিকের মাধ্যমে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। পাশাপাশি ওষুধ গ্রহণের ও প্রয়োজন হতে পারে। সেজন্য কেউ এই ধরনের সমস্যায় ভুগলে অতিসত্বর একজন চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে।