বন্ধুত্বের অন্যরকম সার্কেল
তানজিদা আক্তার
🕐 ৬:২২ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৮, ২০১৯
বন্ধুত্ব নামক ছোট শব্দটার গভীরতা কিন্তু আকাশ সমান। রোজকার চলার পথে হাসি, কান্না গল্পে তারা ছায়ার মতো সঙ্গ দেয়। আমাদের বেড়ে ওঠার অন্যতম সঙ্গী। বন্ধুত্বের সব বড় বড় সার্কেলগুলো গড়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে। চার বছরের পথ চলাটা কখনো কখনো চলতে থাকে শেষ অবধি। বন্ধু থাকে পরম নির্ভরতায় আর বিশ্বাসে। ক্যাম্পাস জীবনে এটাই তো সবচেয়ে বড় পাওয়া। বন্ধুত্বের শুরুর ব্যাপারটা গোলমেলে ঝাপসা। কখন কীভাবে বন্ধু হলাম জানি না।
ক্লাসের সবাই বন্ধু তবুও এ কয়জন বিশেষ কিছু। তাদের ছাড়া আড্ডা জমে না, ঘুরতে ইচ্ছে করে না, তাদের ফেলে খাওয়া হয় না। মন খারাপ হোক, পড়া বুঝি না, কোনো ঝামেলা, আর্থিক টানাপড়েন! বন্ধু আছে, ভাবনা কী। বন্ধুরা হলো একটা স্বচ্ছ আয়না তাদের বলতে হয় না, বোঝাতে হয় না, অনুরোধ করতে হয় না, তবু বুঝে যায় মনের কথা।
ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র সবার, তবু টানটা আত্মার। কেউ গায়ক, তো কেউ আর্টিস্ট। কারও আগ্রহ রন্ধন শিল্পে, তো কারও সিজি হাই। কেউবা আবার সাংবাদিক। সবারই আছে কোনো কোনো নিজস্ব নাম। ডাকনাম ছাপিয়ে সে নামেই বরং তারা পরিচিত খুব।
সব কিছু ছাপিয়ে আমরা বন্ধু ভীষণ। সামনে পহেলা বৈশাখ? রং তুলি নিয়ে বসে পড়েছি, আলপনা আঁকছি কাপড়ে। সবার একই রকম পোশাক পরা তো চাই চা-ই। কখনো বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছি। পাশাপাশি সুযোগ পেলেই কাজ করেছি সংগঠনের হয়ে। মন ছুটে গেলেই দল বেঁধে ঘুরেছি। পড়াশোনা করেছি। বৃষ্টির জলে ভিজেছি কতবার। চা আড্ডায় ঝড় তুলেছি হাজারো। হাতে হাত রেখে গেয়েছি ‘তোরা ছিলি, তোরা আছিস, জানি তোরাই থাকবি, বন্ধু- বোঝে আমাকে, বন্ধু আছে আর কী লাগে?’
বিদায় বেলায় তাদের ছেড়ে যাওয়ার কষ্টটাই বেশি ছিল। চার বছর, অনেকগুলো মাস দিন ঘণ্টা আমাদের একসঙ্গে কেটেছে। পরিবারের বাইরে আরেক সংসার।
রোজকার অসংখ্য অনু ঘটনাজুড়ে দিলে ছবি গল্প তৈরি হবে। সেসব গল্পদের তারা নানা রং দিয়ে রাঙিয়েছে। বিপদে সবার আগে ছুটে এসেছে। হাত ধরে বলেছে, আমরা আছি। এদের ছেড়ে থাকা কি সহজ? বন্ধুদের জন্য কি করতে পারি প্রশ্নের উত্তরে এটাই বলতে চাই শুধু। বন্ধুর জন্য সবচেয়ে সুন্দর যে ব্যাপারটা আমি করতে পারি তাহলো একদম শেষ পর্যন্ত বন্ধু হয়ে থাকা। তাদের দেওয়ার মতো এর চেয়ে দামি কিছু আমার নেই।