ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ভোম্বল রাজার গল্প

দিপংকর দাশ
🕐 ১:১৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৭, ২০১৯

অনেক দিন আগের কথা। এক দ্বীপে গড়ে উঠেছিল এক রাজ্য। সে রাজ্যের নাম ভোম্বল রাজ্য। এই রাজ্যের রাজা ছিলেন ভোম্বল সেন। ধন সম্পদেও পরিপূর্ণ ছিল সে রাজ্যের কোষাগার। রাজা ছিলেন খুব অহংকারী আর দাম্ভিক। রাজ্যের সব মানুষ রাজার অহংকারের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল।

তিন কন্যা ও এক পুত্রকে নিয়ে বেশ সুখেই কাটছিল রাজার দিনকাল। অহংকারী রাজা একদিন ঘোড়ার গাড়ি করে দেশভ্রমণে বের হয়েছেন। তিনি জয়শ্রী নামক এক নগরে প্রবেশ করলেন। সেখানে এক রূপবতী মৎস্য কন্যাকে দেখে তার পছন্দ হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে বিয়ে করে নিয়ে আসেন রাজমহলে। বড় রানী রাগ করে তার তিন কন্যা ও পুত্রকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান। ছোট রানীকে নিয়ে রাজা বেশ সুখেই ছিলেন।

দুই বছর পর ছোট রানীর একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। খুব সুন্দর এই রাজপুত্রকেই রাজা তার সিংহাসনে বসাবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন। সন্তান বড় হতে থাকে। রাজপুত্র হলেও এই কুমারের মধ্যে মৎস্য শিকারের প্রতি ছিল অত্যধিক আকর্ষণ। কয়েক বছর পর এই রাজকুমার সমুদ্রে মৎস্য শিকারের উদ্দেশ্যে বের হয়। শিকার শেষে ফেরার পথে সামুদ্রিক ঝড়ে হারিয়ে যায় এই রাজপুত্র। রাজার কাছে খবর আসে রাজপুত্র সমুদ্রের জলে ডুবে গেছে। রাজা ভেঙে পড়লেন। ছোট রানী কাঁদতে কাঁদতে বুক ভাসালেন। এদিকে সমুদ্রের ঢেউয়ে সাঁতার কেটে কেটে কোনো রকমভাবে রাজপুত্র এসে এক নগরের কিনারায় লাগে। প্রাণে বেঁচে যায় সে। আশ্রয় নেয় এই নগরের রাজা ধনেশ চন্দ্র সেনের গোয়াল ঘরের রক্ষক হিসেবে।

প্রাচুর্যের মাঝে বেড়ে ওঠা রাজকুমার কি পারে এসব কাজ করতে? ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। বাধ্য হয়েই করতে হয় এসব। ভোম্বল রাজার প্রথম স্ত্রী ছিলেন ধনেশ রাজার কন্যা। বড় রানী ও তার সন্তানরা এই রাজ্যেই ছিলেন। হঠাৎ একদিন খবর আসে ভোম্বল রাজ্যে বহিঃশুত্রু আক্রমণ করেছে। অহংকারী রাজার রাজ্যের অবস্থা ভয়াবহ। এই খবর শুনে রানী তার পিতা ধনেশ চন্দ্রের সহায়তায় সৈন্য সামন্ত নিয়ে ভোম্বল রাজ্য রক্ষা করতে যান। প্রচ- যুদ্ধ হয় বহিঃশত্রুর সঙ্গে। শেষে রক্ষা পায় ভোম্বল রাজ্য। বড় রানীর পুত্র গৌরবের বিক্রমে পরাজিত হয় বহিঃশত্রু। ভোম্বল রাজা বন্দি ছিলেন জেলখানায়। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে আনে বীর গৌরব।

রাজার অহংকার চূর্ণ বিচূর্ণ হয়। যে রানীকে অবহেলা করে তাড়িয়ে দিয়েছিল অবশেষে সেই রানী ও তার পুত্রই তাকে প্রাণে বাঁচায়। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজা তার বড় পুত্রকেই যুবরাজ পদে অধিষ্ঠিত করেন। রাজা ভাবেন, মানুষের অহংকারই তার দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper