ওরা ভাইপার ফিশ
ফারুক হোসেন সজীব
🕐 ১২:৫৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৭, ২০১৯
ছোট্ট বন্ধুরা, তোমরা তো অনেক মাছেরই নাম শুনেছ তাই না? কিন্তু কখনো কী ভাইপার মাছের নাম শুনেছ? কী নামটা শুনেই অবাক হলে বুঝি? ভাইপার ফিশকে আসলে সর্প মাছও বলা হয়! ভাবছ, সর্প বা সাপ আবার মাছ হয় কী করে তাই তো? আসলে ওরা দেখতে যে একেবারে সাপের মতোই! আর যখন ওরা গভীর সাগরে ভেসে বেড়ায় তখন ওদের লম্বা শরীর এঁকেবেঁকে চলে। ডুবরিরা তো ওদের হঠাৎ করে দেখলে ভাবে, আরে এত একটা মস্ত বড় সাপ! কিন্তু পরে বুঝতে পারে সাপ কী আর পানিতে থাকে, তাও আবার এত গভীর পানিতে?
পরে বুঝতে পারে ওদের হাঁ করা মুখ দেখে! কারণ ভাইপার ফিশটি সারাক্ষণই মুখ হাঁ করে থাকে। আসলে ওদের মুখের ভেতরে অনেক চিকন আর সরু সরু দাঁত গিজগিজ করে, মনে হয় ওই দাঁতগুলোর কারণেই বুঝি ওরা মুখ বুজতে পারে না! ডুবরিরা অনেকেই আন্দাজ করে যে, ওই সরু সরু দাঁতগুলো দিয়েই ওরা অন্যসব ছোট ছোট মাছগুলোকে শিকার করে থাকে!
সত্যি ভাইপার ফিশ দেখতেও অদ্ভুত! দাঁত থেকে শুরু করে মাথা, পুরো শরীরের গঠন সবই ভয়ংকর আর আজব প্রাণীর মতোই মনে হয়! তবে ওরা লম্বায় ৩০-৬০ সেন্টিমিটারের মতো হয়। যখন রাত হয় তখন ওরা সমুদ্রের অনেক গভীরে চলে যায়, তাও ৮০-১,৫২০ মিটার পানির নিচে! যেহেতু সমুদ্রের অনেক গভীরে অন্ধকার বিরাজ করে, তাই অন্যসব মাছেরা অন্ধকারে আবার ভালো করে দেখতে পায় না! কিন্তু ভাইপার ফিশ ঠিকই দেখতে পায় আর ঠিক অমন অবস্থাকেই ওরা শিকার ধরার উপযুক্ত সময় বলে কাজে লাগায়! তাছাড়া ওদের শরীর থেকে এক প্রকার তির্যক আলোক রশ্মি বের হয়! অন্য মাছেরা সেই আলো দেখতে পেয়ে যেই না কাছে আসে অমনি ভাইপার ফিশ তাদের খপ করে ধরে ফেলে! আসলে ওরা শিকারকে আকৃষ্ট করার জন্যই শরীর থেকে অমন তির্যক আলোক রশ্মি বের করেছিল!
ভাইপার ফিশ উষ্ণ এবং তাপীয় পানিতে থাকতে ভালোবাসে। শক্রদের দেখলেই ওরা ওদের দেহের রং পরিবর্তন করে ফেলতে পারে, সবুজ, রুপালী, এবং কালো রং ওরা ধারণ করতে পারে। ডুবরিদের কাছে ভাইপার ফিশ হচ্ছে এক প্রকার প্রাণঘাতী অনেকটা ধারালো দাঁতের ভ্যামপায়ারের মতো! ওরা দল বেঁধে একটা মস্তবড় তিমিকেও শিকার করে ঘায়েল করতে পারে!
ওরা সাধারণত চিংড়ি মাছ, স্কুইড, ভেজষ ক্র্যাব, ম্যাকারেল এবং অন্যান্য মাছ খেতে পছন্দ করে। ওরা আটলান্টিক, প্রশান্ত মহাসাগর এবং অস্ট্রেলিয়ার আশপাশে বসবাস করে! ভাইপার ফিশের বৈজ্ঞানিক নাম- Chauliodus Sloani। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন যে, একটি প্রাপ্তবয়স্ক ভাইপার ফিশ গড়ে সাধারণত ১৫-৩০ বছর পর্যন্তও বাঁচতে পারে!
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228