শিক্ষক-কর্মচারী আন্দোলনে উত্তাল বেরোবি
সাইফুল ইসলাম, বেরোবি
🕐 ১২:৪৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৫, ২০১৯
প্রশাসনিক ভবনে তালা, লাগাতার কর্মবিরতি, বিক্ষোভ-মিছিল, সমাবেশ, মানববন্ধনসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের দ্বিমুখী আন্দোলনে এবার উত্তাল হয়ে উঠেছে বেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ভিসি-রেজিস্ট্রারসহ ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীল কেউ ক্যাম্পাসে আসছেন না। সব মিলিয়ে একাডেমিক, প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা।
জানা যায়, গত এক মাস ধরে তিন দফা দাবিতে বিশ^বিদ্যালয়ের কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালনসহ বিক্ষোভ-মিছিল, সমাবেশ, প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়াসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। তাদের দাবিগুলো হলো ৫৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বকেয়া বেতন পরিশোধ, নীতিমালা প্রণয়ন ও সময়মতো পদোন্নতি।
এসব দাবিতে এক মাস ধরে আন্দোলন করলেও কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি বাস্তবায়ন করছেন না বলে কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের মুখপাত্র রবিউল ইসলাম জানান। পরিষদের আহবায়ক মাহাবুবার রহমান বাবু বলেন, গত ২১ জুলাই ভিসি আমাদের সঙ্গে ক্যাম্পাসের বাইরে নগরীর সার্কিট হাউসে আলোচনার জন্য বসেছিলেন। কিন্তু তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য এইচ এন আশিকুর রহমানের ছেলে রাশেক রহমানকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন, এতে আলোচনা ভেস্তে গেছে।
অপরদিকে ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ দাবিতে গতকাল মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের একাংশ (ভিসিপন্থি হিসেবে পরিচিত)। তারা শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা কামনা করেন। একই সঙ্গে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। মানববন্ধনে অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালকের দায়িত্বে থাকা গণিত বিভাগের প্রফেসর ড. আর এম হাফিজুর রহমান সেলিম, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পরিচালকের পদে থাকা বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. পরিমল চন্দ্র বর্মণ, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি প্রত্যাশী আপেল মাহমুদসহ বিভিন্ন পদে পদোন্নতি প্রত্যাশী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সদস্য সচিব মাসুম খান বলেন, ভিসি ধারাবাহিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামালও গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে প্রশাসন ভবনে আসেন না। এক মাস ধরে ক্যাম্পাসেই (রংপুরে) আসেন না। ভিসি, রেজিস্ট্রার দুই জনই ঢাকায় থাকেন। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক শৃঙ্খলা কীভাবে আসবে প্রশ্ন রাখেন তিনি।
জানা গেছে, ভিসি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ গত দুই বছরে সাড়ে ৭শ’ দিনের মধ্যে সাড়ে ৫শ’ দিনই ঢাকায় থেকেছেন। সম্প্রতি তিনি ক্যাম্পাসেই আসছেন না। রংপুরে এলেও নগরীর সার্কিট হাউসে অবস্থান করে জরুরি কিছু ফাইল স্বাক্ষর করে চলে যান। তার অনুপস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা চলছেই।
এ বিষয়ে কথা বলতে ভিসি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।