ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই বিক্রি হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক
সাজন আহম্মেদ পাপন, কিশোরগঞ্জ
🕐 ৮:৪৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ০৭, ২০১৯
কিশোরগঞ্জে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া, অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স পূরণ না করা বা ছোটখাটো শারীরিক সমস্যার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার প্রবণতা প্রবলভাবে দেখা দিয়েছে।
সূত্র জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণা অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক ওষধের ভুল এবং অসচেতন ব্যবহারের কারণে বিশ্বব্যাপী নিউমোনিয়া, যক্ষার মতো রোগের চিকিৎসা প্রক্রিয়া ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অ্যান্টিবায়োটিক ওষধ সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ গবেষণায় উঠে আসে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের অসচেতন ব্যবহারের কারণে এ জাতীয় ওষুধ কার্যকারিতা হারাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া সাধারণ কিছু রোগের জন্য প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ওষুধ খেয়ে থাকে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে একেবারেই সচেতন নন তারা। ওষুধ খেলে সাময়িকভাবে ঠিক হয়ে যায় তাই এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সাধারণত চিন্তাই করে না সাধারণ মানুষরা। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ক্রেতার কাছে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করা যাবে না সরকারের পক্ষ থেকে ওষুধের দোকানগুলোতে এমন নির্দেশনা দেওয়া আছে। কিন্তু সরেজমিন গিয়ে ওই নিয়মের বাস্তবায়ন পাওয়া যায়নি।
আফরান, মাহবুব, মুরাদ, নূরে আলম, রনি এমন অসংখ্য মানুষের সঙ্গে কথা বললে জানা যায়, এভাবে ওষধ গ্রহণ করায় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে একেবারেই সচেতন নন তারা। তাদের পরিচিত অনেকেই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ খেয়ে থাকেন। বহুল ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিক কিনতে চাইলে কোনো প্রশ্ন ছাড়াই ওষুধ বিক্রি করেন দোকানদাররা। আবার অনেক ডাক্তাররাই ছোটখাটো রোগের বেলায় প্রেসক্রিপশনে অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করছেন।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. আবদুল ওয়াহাব বাদল বলেন, বিশ্বের কোথাও প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করা যায় না। যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করার ফলে মানুষ অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ায় শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ইদানীং দেখা যাচ্ছে অনেক অপারেশনের রোগীদের ক্ষত শুকাতে দেরি হয়। এটা অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাব। কিছুদিন পর দেখা যাবে মানুষের শরীরে আর কোনো অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে না।
জেলা ওষুধ সমিতির সভাপতি হানিফ খান বলেন, এ ব্যাপারে কঠোরভাবে আমার সমিতির সবাইকেই নির্দেশনা দেওয়া আছে প্রেসক্রিপশন ছাড়া যেন ওষুধ বিক্রি না করে।
জেলা ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক মোছাম্মৎ ফোয়ারা ইয়াছমিন জানান, বিভিন্ন সময়ে উপজেলাওয়ারী জনসচেতনতা বাড়ানোর কাজ করে যাচ্ছি। আমরা ফার্মেসি মালিক এবং জনসাধারণকে এ ব্যাপারে সভা সেমিনারের মাধ্যমে অবগত করছি।