সমুদ্রে ভাসমান আইসবার্গ
ফারুক হোসেন সজীব
🕐 ১১:২০ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ০৬, ২০১৯
আইসবার্গ কিংবা হিমশৈলের কথা শুনলেই কিন্তু শরীরটা ভয়ে একদম কেঁপে ওঠে, তাই না? অমন হবারই কথা কারণ ওই আইসবার্গ বা হিমশৈল দেখতে তো একেবারে দৈত্যাকৃতির মতোই! তাও যদি স্থির দাঁড়িয়ে থাকত তবু কিছুটা ভয়মুক্ত থাকা যেত; কিন্তু ওটা তো ভেসে বেড়ায় সমুদ্রে! মাঝে মাঝে আবার মুখ থুবড়েও পড়ে।
আইস (Ice) শব্দটির অর্থ-হিম আর জার্মান শব্দ বার্গ (Berg) মানে হলো- পাহাড়! অর্থাৎ সমুদ্রে ভাসমান বিশালাকার বরফস্তূপকে হিমশৈল আইসবার্গ বলে। সত্যি এই আইসবার্গ রীতিমতো একটা পাহাড়ের মতো! বিখ্যাত অভিযাত্রীকরা তো অমন আইসবার্গ দেখেই ভাবত এখানেই বুঝি সমুদ্রের শেষ! ওপাশে আর কিছুই নেই! এজন্য তারা কত যে সমুদ্র অভিযান ত্যাগ করেছেন বিশেষ করে দক্ষিণ দিকের সমুদ্র অভিযানগুলো!
তবে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৮ কিমি পর্যন্ত লম্বা হিমশৈল দেখা গেছে। এই হিমশৈল সৃষ্টির পেছনে মূলত মেরু এলাকাগুলোই দায়ী! কারণ মেরু অঞ্চলের বরফস্তূপ ভেঙে আস্তে আস্তে সাগরে নেমে আসে এবং সাগরের পানিতে ভাঙা ভাঙা স্তূপগুলো মেঘের মতো ভেসে বেড়ায়। পরে সেগুলো এক জটলা হয়ে সৃষ্টি হয় বিশালকার এক অদ্ভুত পাহাড়। প্রায় সাত মাইল লম্বা আর সাড়ে তিন মাইল চওড়া হিমশৈলও দেখা গেছে। যেটার উচ্চতা ছিল প্রায় ৬০ ফুট। আবার ৪০০ ফুট উঁচু হিমশৈলও দেখা গেছে!
টাইটানিক জাহাজের কথা নিশ্চয় মনে আছে সবার! ওটা নিয়ে তো জগদ্বিখ্যাত মুভি হয়ে গেল। কিন্তু এই টাইটানিক জাহাজও কিন্তু উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে অমন শক্ত আর ধারালো হিমশৈলের ধাক্কা খেয়ে গভীর সমুদ্রে ডুবে যায়। সেটা অবশ্য ১৯১১ সালের কথা। এই হিমশৈল পানির ওপর যতটা অংশ জেগে থাকে ঠিক তার আটগুন বড় অংশ থাকে পানির তলায়। ঠিক যেন একটি ডাঙ্গার পাহাড়ের বৈশিষ্ট্য!
এই হিমশৈল যদি প্রচণ্ড সূর্যের তাপে কখনো গলতে থাকে, তাহলে উল্টোও যেতে পারে! এজন্য মেরু অঞ্চলে সূর্যের তাপের সময় জাহাজগুলো যখন চলতে থাকে তখন হিমশৈল থেকে যথেষ্ট দূরে অবস্থান করতে হয়। না হলে বরফের পাহাড় ধসে জাহাজগুলোর দারুণ ক্ষতি হতে পারে! গ্রিনল্যান্ডের কথাই যদি বলি, সেখানে আবার দৈত্যাকৃতির মতো উঁচু উঁচু সাংঘাতিক এক রকমের হিমশৈল জমে। জমাকৃত হিমশৈল আবার নিজের ভার সইতে না পেরে পিচ্ছিল হয়ে সমুদ্র গিয়ে পড়ে!
তারপর ল্যাব্রাডর স্রোতে সেই জমাকৃত হিমশৈল ভাসতে ভাসতে দক্ষিণে চলে যায়! বিজ্ঞানীরা হিসাব করে দেখেছেন, বছরে প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার ছোট-বড় হিমশৈল ভাসতে ভাসতে সমুদ্রের পানিতে গিয়ে মেশে! আর এটাই হচ্ছে আতঙ্কের বিষয়! পুরো বিশ্ববাসী ঠিক এজন্যই আজ আতঙ্কিত! কারণ পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে পুরো পৃথিবীটাই না আবার প্লাবিত হয়ে যায়!
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228