ঢাকা, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ম নে র শ রী র

সিজোফ্রেনিয়া : লক্ষণ ও করণীয়

শারমিন আরা
🕐 ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৪, ২০১৯

সিজোফ্রেনিয়া একটি অন্যতম মানসিক রোগ। তবে সব অস্বাভাবিক আচরণকে সিজোফ্রেনিয়া বলা যাবে না। কারও সিজোফ্রেনিয়া হয়েছে কিনা তা বলতে পারেন একজন মানসিক রোগের ডাক্তার। লক্ষণসমূহ

১ ব্যক্তির মধ্যে এমন কিছু বিশ্বাস তৈরি হয় যার পক্ষে তার কাছে কোনো প্রমাণ নেই, কোনো যুক্তি এই বিশ্বাসকে সমর্থন করে না এবং এই বিশ্বাস ব্যক্তির সমাজ বা শিক্ষাগত স্তরের বিশ্বাসগুলোর সঙ্গে কোনোভাবেই মেলে না। যেমন- কেউ যদি বিশ্বস করেন যে, তার কোনো বিশেষ ক্ষমতা আছে যা অন্যদের নেই এবং এই বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে তিনি অসম্ভবকেও সম্ভব করতে পারেন।

২ ব্যক্তি এমন কিছু দেখে অথবা শোনে অথবা স্পর্শ পায় যা একেবারেই বাস্তবে হচ্ছে না। তার আশপাশের মানুষজন বুঝতে পারে যে বাস্তবে এমন কোনো কিছুই হচ্ছে না তবু ব্যক্তি তাদের বিশ^াস করতে পারে না।

৩ ভাষার ক্ষেত্রেও কিছু সমস্যা দেখা দেয়। তাদের কথাগুলো বিচ্ছিন্ন হয়। তারা ক্রমাগত অসঙ্গতিপূর্ণ কথা বলতে পারেন। অর্থাৎ তাদের কথা স্পষ্টভাবে বোঝা যায় না।

৪ তাদের আচরণের ক্ষেত্রেও কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। ব্যক্তি অসঙ্গতিপূর্ণ আচরণ করা শুরু করেন। একা থাকতে পছন্দ করেন, কখন কখন একদম স্থির হয়ে থাকেন বা একদম নড়াচড়া করেন না। আবার কখনো তারা অতিরিক্ত চঞ্চল হয়ে উঠেন অথবা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন।

৫ ব্যক্তির চিন্তা ভাবনায় কিছু পরিবর্তন আসে। নিজের যত্ন নিজে নিতে পারে না। সে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে থাকতে পারে না। নিজের পেশাগত কাজ ঠিকমতো করতে পারে না।

৬ এ ছাড়া আরো কিছু সমস্যা দেখা যেতে পারে। যেমন-ব্যক্তির মধ্যে আবেগীয় অসঙ্গতি দেখা যায়। যেমন- হাসির সময় না হেসে কেঁদে ফেলতে পারেন, আবার দুঃখের খবর শুনে হেসে ফেলতে পারেন। তাদের মুখভঙ্গিতে কোনো আবেগীয় প্রকাশ থাকে না।
করণীয়

রোগীকে অবশই একজন মানসিক রোগের ডাক্তারকে দেখাতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, সিজোফ্রেনিয়া যাদের হয় তাদের মধ্যে শতকরা ২৫ ভাগ রোগী চিকিৎসার পর সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়, আর শতকরা ৫০ ভাগ রোগী ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে মোটামুটি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন এবং বাকি ২৫ ভাগ রোগী কখনোই ভালো হয় না।

তাই সবচেয়ে নিরাপদ হচ্ছে চিকিৎকের পরামর্শমতো চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া। কারণ নিয়মিত ওষুধ ও সাইকোথেরাপি নিলে বা মেনে চললে এই রোগটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

এখন থেকে হালরং-এ মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে নিয়মিত লিখবেন শারমিন আরা
অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

 
Electronic Paper