ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দুদক-পুলিশের ঘুষকাণ্ড

শর্ষের ভূত তাড়ান

সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:০৭ অপরাহ্ণ, জুন ১২, ২০১৯

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থায় চির ধরছে ক্রমশ। সম্প্রতি এক পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক দুদক পরিচালককে ঘুষ দেওয়ার অডিও ফাঁস নেতিবাচক দৃষ্টান্তের জন্ম দিয়েছে। এ ছাড়া ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যাকাণ্ডে আলোচনায় এসেছেন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। পুলিশ কেন অপরাধী হিসেবে শনাক্ত হবে! যেখানে তার কাজ অপরাধীদের ধরা। পুলিশ কর্মকর্তা ডিআইজি মিজানুর রহমান পুলিশ ইস্যুতে ঘি ঢাললেন। তিনি অভিযোগ এনেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা খন্দকার এনামুল বাসিরের বিরুদ্ধে। মামলা থেকে মিজানকে খালাস দিতে বড় অঙ্কের টাকা ঘুষ দাবি করেছিলেন বাসির। শেষ পর্যন্ত রফা হয় ৪০ লাখ টাকায়। মিজান দুদফায় চুক্তির টাকা পরিশোধ করেন। তবুও আসামির তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেননি বাসির। বরখাস্তকৃত ডিআইজি মিজান এতে ক্ষিপ্ত হন, ফাঁস করে দেন লেনদেন ও দুদকের তথ্য ফাঁসের অডিও।

 

সরকারি সংস্থার কর্মকর্তারাই যদি দুর্নীতি ও ঘুষ লেনদেনের মতো আইনবিরোধী কাজ করেন তা অস্বাভাবিক ও নিন্দনীয়। বাসির ও মিজানের এমন কাণ্ডে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে উভয় সংস্থা। দুর্নীতি নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান টিআইবিও নিন্দা জানিয়েছে এমন ঘুষকা-ে। এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেছেন, বাসিরের বিরুদ্ধে অভিযোগটি অসদাচরণের। ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠানের নয়। মিজানের ঘুষকা- প্রমাণিত হলে দুদক মামলা করবে বলে উল্লেখ করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান। অন্যদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, দুদক পরিচালককে ঘুষ দেওয়ার প্রমাণ মিললে মিজানের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসব বক্তব্যে সন্তুষ্ট হতে পারেননি অনেকেই। দুদক চেয়ারম্যান যেভাবে ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠানের নয় বলে বিষয়টিকে আড়ালে নিলেন তা কতটা সুবিবেচনাপ্রসূত! অন্যদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে যে বক্তব্য দেওয়া হলো তাও প্রশ্নবিদ্ধ। মিজান নিজের ‘অপরাধ স্বীকার’ করলেও শীর্ষ পর্যায় থেকে অস্পষ্টতা নির্দেশ করা কতটুকু বাস্তবসম্মত! মিজানের বিরুদ্ধে এক নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ ও বিয়ে করা; আরেক সংবাদ পাঠিকার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ রয়েছে। নানা অভিযোগে তাকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর মামলা গড়ায় দুদকে। অবৈধ অর্থ অর্জনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

পুলিশ বাহিনী এবং দুদক দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এ দুই সংস্থাকে কোনোভাবেই বিতর্কে জড়ানো উচিত নয়। তাতে করে নষ্ট হবে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস। বিশ্বাস ও আস্থা হারিয়ে ফেললে দুই প্রতিষ্ঠানের পক্ষেই ‘আইনের শাসন’ প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হয়ে পড়বে- বলার অপেক্ষা রাখে না! বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা যত তাড়াতাড়ি হৃদয়ঙ্গম করবেন ততই মঙ্গল। আইন সবার জন্যই সমান- এটা কথার কথা নাকি বাস্তব, প্রমাণ দেওয়ার সময় এখনই।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper