মাধ্যমিকেই ঝরে পড়ছে আড়াই লাখ শিক্ষার্থী
তারিখ শেষ হলেও কলেজে ভর্তির আবেদন করেনি দুই লাখ ৪২ হাজার ৪২ শিক্ষার্থী
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১২:৩১ অপরাহ্ণ, মে ২৫, ২০১৯
চলতি শিক্ষাবর্ষে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তির আবেদন করেনি। ইতিমধ্যে আবেদনের সময়সীমাও শেষ হয়ে গেছে। ফলে এসব শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে এবং কেউ কেউ বিদেশে একাদশে ভর্তি হতে আবেদন করবে বলে মনে করছেন বোর্ড কর্মকাতারা।
ঢাকা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ মে সারা দেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। সপ্তাহান্তে ১২ থেকে শুরু হয় কলেজে ভর্তির অনলাইনে আবেদন। ২৩ মে রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত ছিল আবেদনের শেষ সময়। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে ১৪ লাখ ১৫ হাজার ৮২৫ জন শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হতে অনলাইন ও এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করেছে। আর পাস করেছিল ১৭ লাখ ৪৯ হাজার ১৬৫ শিক্ষার্থী।
এরমধ্যে কারিগরি বোর্ড থেকে পাস করেছেন ৯১ হাজার ২৯৮ জন। এই হিসেবে এবার মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েও ২ লাখ ৪২ হাজার ৪২ শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে আবেদন করেনি; যা উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর এক-সপ্তাংশ।
মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েও এবার ২ লাখ ৪২ হাজার ৪২ শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে এখনো আবেদন করেনি, যাদের বেশির ভাগই ঝরে পড়বে বলে বোর্ড কর্মকর্তারা মনে করছেন ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক মো. হারুন-আর-রশিদ। তিনি বলেন, যারা আবেদন করেনি তাদের অনেকে ঝরে পড়বে, কেউ কেউ দেশের বাইরে পড়তে যাবে। তবে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে কিছু শিক্ষার্থী একাদশে ভর্তি হতে আবেদন করবে বলে মনে করছেন তিনি।
প্রথম ধাপে যারা ভর্তির আবেদন করে না তাদের অধিকাংশই ঝরে পড়ে এমন অভিজ্ঞার কথা জানিয়েছেন ঢাকা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আমাদের অভিজ্ঞতা হল- প্রথম ধাপে যারা আবেদন করে না, তাদের বেশির ভাগই ঝরে পড়ে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে হাতেগোনা কিছু শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হতে আবেদন করে।
কলেজ পরিদর্শক জানান, এবার কলেজে ভর্তি হতে ১০ লাখ ৫২ হাজার ১৮৪ জন অনলাইন এবং ৩ লাখ ৭৪ হাজার ২২২ জন এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করেছেন। ২৪ থেকে ২৬ মের মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবেদন যাচাই-বাছাই ও আপত্তি নিষ্পত্তি করা হবে জানিয়ে অধ্যাপক হারুণ বলেন, পুনঃনিরীক্ষণে যাদের ফল পরিবর্তন হবে তারা ৩ থেকে ৪ জুন পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। পছন্দক্রম পরিবর্তন করা যাবে ৫ জুন।
১০ জুন প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে। প্রথম তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের ১১ থেকে ১৮ জুন সিলেকশন নিশ্চয়ন (যে কলেজের তালিকায় নাম আসবে ওই কলেজেই যে শিক্ষার্থী ভর্তি হবেন তা এসএমএসে নিশ্চিত করা) করতে হবে। এরপর ১৯ থেকে ২০ জুন দ্বিতীয় পর্যায় এবং ২৪ জুন তৃতীয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবেদন নিয়ে ২১ জুন দ্বিতীয় পর্যায় এবং ২৫ জুন তৃতীয় পর্যায়ের ফল প্রকাশ করা হবে।
এবার ঢাকা বোর্ডের ৩ লাখ ৯৯ হাজার ১৯৫ জন, রাজশাহীর ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫৮২ জন, চট্টগ্রামের ১ লাখ ২২ হাজার ৩৬ জন, কুমিল্লার ১ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪৫ জন, যশোরের ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৯৪ জন, বরিশালের ৭৭ হাজার ৪২০ জন, সিলেটের ৮০ হাজার ১৬২ জন, দিনাজপুরের ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯৭৮ জন, ময়মনসিংহের ৯৬ হাজার ৫৪৩ জন এবং মাদ্রাসা বোর্ডের ১ লাখ ২৮ হাজার ৮১৮ শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হতে আবেদন করেছে।
এবারও সর্বনিম্ন ৫টি এবং সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে আবেদন করতে পেরেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীর মেধা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি কলেজে তার অবস্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
অধ্যাপক হারুন জানান, ১৪ লাখ ১৫ হাজার ৮২৫ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৬টি আবেদন জমা পড়েছে। এরমধ্যে অনলাইনে ৫৮ লাখ ৬২ হাজার ৯৫টি এবং এসএমএসের মাধ্যমে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৯৫১টি আবেদন করেন শিক্ষার্থীরা।