প্রবাসী নারী শ্রমিক
শারমিন আক্তার
🕐 ১:০৩ অপরাহ্ণ, মে ০২, ২০১৯
নিজেদের ভাগ্য বদলাতে বিদেশ যান আমাদের দেশের নারী শ্রমিকরা, সেও বেশ অনেক দিন ধরে। দেশের জন্য বয়ে আনেন বৈদেশিক মুদ্রা। কিন্তু এই ত্যাগের বিনিময়েও কারও মিলছে না অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। বরং তারা অনেকে দালালের খপ্পরে পড়ে বিদেশে পাড়ি দিয়ে হয়েছেন নিঃস্ব। অভিবাসী নারী শ্রমিকদের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কর্মস্থলে নানারকম চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে কাজ করতে হয়। গৃহশ্রমিক, নার্স, পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজের জন্য আকর্ষণীয় বেতন দেওয়ার লোভ দেখিয়ে নারীদের বিভিন্ন দেশে নিয়ে যাওয়া হলেও কখনো কখনো তাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি সেসব দেশের গৃহকর্তারাও বাংলাদেশি নারীদের ওপর যৌন নির্যাতন চালাচ্ছেন। প্রতিবাদ করলেই নারী শ্রমিকদের ওপর নেমে আসছে অমানুষিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।
বিদেশে গিয়ে নিজেদের ভাগ্য কতটুকু ফেরাতে পারছেন নারী শ্রমিকরা? সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে অধিক অর্থ উপার্জনের আশায় তারা বিদেশে যাচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু অনেকেই যৌন নির্যাতনসহ নানা রকম নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। অথচ অভিবাসী নারী শ্রমিকরা পুরুষদের চেয়ে কম উপার্জন করলেও তারা তাদের আয়ের ৯০ শতাংশ অর্থই দেশে পাঠিয়ে দেন। যেখানে পুরুষ শ্রমিকরা পাঠান মাত্র ৫০ শতাংশ। এ থেকেই প্রতীয়মাণ হয় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে বাংলাদেশের নারীদের রয়েছে বড় ভূমিকা। কিন্তু তাদের জীবনে নানা পরিণতি দেখে নারী সমাজ উদ্বুদ্ধ হবে, না নিরুৎসাহিত হবে? সেটা এখন ভেবে দেখার সময় হয়েছে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমানে সাত লাখ নারী কর্মী বিদেশে অবস্থান করছেন। শুধু ২০১৭ সালেই এক লাখ ২১ হাজার ৯২৫ জন নারী শ্রমিক দেশের বাইরে গেছেন। বাংলাদেশে মহিলা পরিষদের তথ্য মতে, ২০০৩ সালে সরকার আংশিক ও স্বল্পদক্ষ নারীদের অভিবাসনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। ১৯৯১ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত অভিবাসীদের মধ্যে যেখানে নারী অভিবাসীদের সংখ্যা ছিল মাত্র ১ শতাংশ। নীতিমালায় পরিবর্তনের কারণে ২০০৯ সালে এই হার উন্নীত হয় ৫ শতাংশে।
বাংলাদেশ থেকে সাধারণত লেবানন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্দান, ওমান, মরিশাস, কুয়েত, মালয়েশিয়া, বাহরাইন, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে নারী শ্রমিকরা কাজ করতে যাচ্ছেন। এর মধ্যে গৃহকর্মী হিসেবে নারী শ্রমিকদের চাহিদা সবচেয়ে বেশি হলেও নির্যাতনের শিকার তারাই বেশি হন।