ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

হিটস্ট্রোক বা অত্যধিক গরমে করণীয়

অধ্যাপক ডা. জোনাইদ শফিক
🕐 ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৬, ২০১৯

দুঃসহ গরমে কিছু রোগ দেখা যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিটস্ট্রোক। হিটস্ট্রোক বা অত্যাধিক গরমে মূর্ছা যাওয়া।

হিটস্ট্রোকের লক্ষণ : সাধারণ হাইপারথারমিয়া বা তাপমাত্রা ৪০ক্ক৬ ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেড বা ১০৫ক্ক১ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হলে এর সঙ্গে মানসিক কনফিউশন এবং ঘাম হয় না। রোগী অধিক গরমে জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারেন। কিছু কিছু বস্তু হিটস্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অ্যালকোহল বা মদ্যপান, স্টিমুলেন্টস এবং বয়স সম্পর্কিত পরিবর্তনগুলো।

হিটস্ট্রোকের প্রতিরোধ : বেশি তাপে ডিহাইড্রেশন যেন না হয় এ ব্যাপারে সাবধনতা অবলম্বন করলে হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। হালকা, ঢিলেঢালা সুতার কটন পোশাক পরিধান ঘাম এবং এভাপোরেশনে সাহায্য করে। মাথায় বড় রঙিন হ্যাট পরলে মাথায় সূর্য তাপ প্রত্যক্ষভাবে পড়বে না এবং ঘাম বেরোনোর ফলে মাথা ঠাণ্ডা থাকবে। খুব স্ট্রেনাস ব্যয়াম পরিত্যাজ্য বিশেষত দিনের বেলায়। প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে আর্দ্রতা বা হিউমিডিটি বেশি থাকলে ঘাম বের হতে পারে না।

বেশি ফ্লুয়িড গ্রহণ প্রচণ্ড গরম এবং আর্দ্রতা বেশি হলে বেশি পরিমাণে ফ্লুয়িড খেতে হবে, যাতে ঘামের কারণে যা বের হয়ে যায় তা যেন প্রতিস্থাপিত হয়। প্রস্রাবের রং দেখে এটা বেশি বোঝা যায়। কনসেনস্ট্রেটেড প্রস্রাব প্রথমে গাঢ় হলুদ রঙের হবে, যা শরীরের ডিহাইড্রেশন নির্দেশ করে।

চিকিৎসা
হিটস্ট্রোক হলে রোগীর জন্য তাড়াতাড়ি যান্ত্রিক ঠাণ্ডার ব্যবস্থা করতে হবে। এটা মেডিকেল ইমার্জেন্সি। শরীরের তাপমাত্রা সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে কমাতে হবে। এ জন্য রোগীদের ঠাণ্ডা জায়গায় ঘরের মধ্যে, ছায়াযুক্ত এলাকা, এয়ারকুলারের নিচে রাখতে হবে। কাপড়-চোপড় খুলে প্যাসিভ কুলিং, হাইপোথারমিয়া ভেস্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। ঠাণ্ডা তোয়ালে দিয়ে গা ঢেকে রাখলে শরীরের তাপমাত্রা কমে আসবে। বৈদ্যুতিক পাখা এবং ডিহিইমিডিয়ার এয়ারকন্ডিশনের ব্যবস্থা করতে হবে।

রোগীর শরীরের পানি পূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য প্রচুর পরিমাণে মুখে পানি, ফ্লুয়িড, ফলের রস খেতে দিতে হবে। বাণিজ্যিকভাবে প্রাপ্ত আইসোটোনিক খাবার, পানিও দেওয়া যেতে পারে। রোগী ভারসাম্যহীন, অজ্ঞান বা মুখে খেতে না পারলে শিরার মাধ্যমে ফ্লুয়িড দিতে হবে। রোগীর রক্তচাপ, হার্টবিট, শ্বাস-প্রশ্বাস মনিটর করতে হবে এবং প্রয়োজনে আইসিইউ বা সিসিউ চিকিৎসা দিতে হবে।

লেখক : বিশিষ্ট ব্যথা বিশেষজ্ঞ, এমবিবিএস (ডিএমসি), পিএসডি (জাপান)
চেম্বার-জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল, ঢাকা

 
Electronic Paper