ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

জেল থেকে হত্যার নির্দেশ অধ্যক্ষের

সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুন

সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:৩১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৫, ২০১৯

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে জেলে বসেই হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা। যৌন হয়রানির অভিযোগে করা মামলা না তোলায় আলিম পরীক্ষা চলাকালে অধ্যক্ষের নির্দেশে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মেরেছে দুর্বৃত্তরা। আলোচিত এ ঘটনার পর ১৩ জন আসামি গ্রেপ্তার হলে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। একজন অপরাধী যদি জেলে বসেই হত্যার নির্দেশ দিতে সক্ষম হয় তবে জেল কর্তৃপক্ষেরও এর সঙ্গে জড়িত থাকার প্রশ্ন উঠতে পারে। এ ছাড়াও সোনাগাজী থানার ওসির বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ।

খোলা কাগজের প্রতিবেদন বলছে, মাত্র দুটি কারণে নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যা করা হয়েছে। এক, অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা করে নুসরাত আলেম সমাজকে হেয় করেছেন। দুই, সিরাজের ঘনিষ্ঠজন শামীমের প্রেমের প্রস্তাব বারবার প্রত্যাখ্যান করে নুসরাত। এরই জেরে দগ্ধ হয়ে পাঁচ দিন জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধে হেরে গেলেন নুসরাত। এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা তথ্য দেয়, সিরাজ-উদ-দৌলা জেলখানায় বসেই হত্যার নির্দেশ দেয়। এখন কথা হচ্ছে, জেলখানায় বন্দি থেকেও যদি আসামিরা অপকর্ম থেকে দূরে থাকতে না পারে তবে জেল কর্তৃপক্ষের কাজ কী?

এর আগেও দেশের বিভিন্ন এলাকার জেলখানায় অনিয়ম বিশৃঙ্খলার তথ্য উঠে এসেছে। কতিপয় জেলখানার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত কি না তাও তদন্ত করতে হবে। কোনোভাবেই নুসরাতের ঘটনাটি যেন ধামাচাপা না পড়ে সে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আশ্চর্যের বিষয়, দেশে খুন-ধর্ষণের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা থামছেই না। সাধারণ অপরাধীসহ ধর্মীয়-প্রশাসনিক মুখোশ পরেও অনেকে এ জাতীয় অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। এরই মধ্যে অনেকে গ্রেপ্তার হলেও আইন আদালতের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়েও পড়ছে।

দেশে ধর্ষণ-খুনের মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নজির নেই বললেই চলে। যে কারণে অপরাধীরা অপকর্ম সংঘটিত করে পার পেয়ে গেলে তাদের সেই প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যেরও ধর্ষণের মতো অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকার খবর রয়েছে, যা দেশের সার্বিক ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। সোনাগাজীর ওই ঘটনার সঙ্গে পুলিশ প্রশাসন, জেল কর্তৃপক্ষ কিংবা সাধারণ আসামি অনেকেই জড়িত। আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান, তাই তদন্তের মাধ্যমে এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে নজির সৃষ্টি করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আইনকানুন এবং শৃঙ্খলা ব্যবস্থার কার্যকারিতা এবং এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আশায় দেশের ১৭ কোটি মানুষ তাকিয়ে আছে, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই মাথায় রাখতে হবে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper