বসন্তে শিশুর সুস্থতা
ডা. কে এম শহিদুল হক
🕐 ১২:০৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১২, ২০১৯
জন্ম হওয়ার পর থেকেই সংক্রামক রোগসহ নানা অসুখে আক্রান্ত হয় শিশু। বিশেষ করে বসন্তে হিমেল হাওয়া কিন্তু বিদায় নেয়নি। ঋতু পরিবর্তনের এ সময় ভাইরাসজনিত জ্বরের প্রকোপ দেখা যায়।
এতে মাথাব্যথা, শরীর ও গিরায় ব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া, কাশি, অরুচি, দুর্বলতা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে, জলবসন্ত, অ্যালার্জির মতো রোগগুলো এ সময়ই বেশি হয়। তাই এসব অসুখ থেকে শিশুকে দূরে রাখার উপায়গুলো জেনে রাখা ভালো।
সময়টা জলবসন্তের : বসন্তকালে জলবসন্তের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এ রোগ খুব ছোঁয়াচে, বিশেষ করে যাদের কোনো দিন এ রোগ হয়নি তাদের জন্য। সরাসরি সংস্পর্শে এবং রোগীর হাঁচি-কাশির মাধ্যমে জলবসন্ত ভাইরাস ছড়ায়। আক্রান্ত রোগীকে আলাদা রাখতে হবে ও চিকিৎসকের পরামর্শ মতো লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে।
ফুলে অ্যালার্জি : বসন্তে সবচেয়ে বেশি হয় পুষ্পরেণু অ্যালার্জি। এ সময় নানা রঙের ফুল ফোটে। বাতাসে উড়ে বেড়ায় এসব ফুলের রেণু। পুষ্পরেণু নাক ও শ্বাসযন্ত্রে ঢুকে চুলকানি, কাশি, হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি সমস্যা তৈরি করতে পারে। অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে এসে শরীরে প্রতিক্রিয়া হয়। এ সময় হাঁপানিও বেড়ে যায় অনেকের। যেসব শিশুর অ্যালার্জি বা হাঁপানি আছে তাদের ফুলবাগান, পার্কে না যাওয়াই ভালো। প্রয়োজনে শিশুকে মাস্ক পরিয়ে দিন। সমস্যা বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
জ্বর ও সর্দিকাশি : শিশুদের ভাইরাল ইনফেকশন হয়ে জ্বর, সর্দিকাশিতে আক্রান্ত হতে দেখা যায়।
শিশুর গলাব্যথা, গলায় খুশখুশি কাশি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নাক দিয়ে পানি পড়া, শরীর ম্যাজম্যাজ করা, খাওয়ার অরুচিসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। শিশুদের ভাইরাল ইনফেকশনে সাধারণত ৪-৫ দিনে এমনিতেই সেরে উঠে। এ সময় অভিভাবকরা শিশুকে যতদূর সম্ভব বিশ্রামে রাখুন। এতে শিশুরা আরামবোধ করবে। আদা, লেবু চা, পুদিনা পাতা, তুলশীপাতার রস, কালিজিরা ইত্যাদি শিশুকে দ্রুত সেরে উঠতে এবং আরাম পেতে সাহায্য করবে। তবে দীর্ঘসময় শিশুরা সর্দিকাশিতে আক্রান্ত থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তবে দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে মায়ের বুকের দুধ এবং ছয় মাসের বেশি বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে পুষ্টিকর খাবার ও প্রচুর পানি পান করাতে ভুলবেন না।
লেখক : শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ, ঢাকা