কারেন্ট জালে পাখি হত্যা বন্ধ করুন
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
🕐 ৯:২৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৯
পাখি হলো প্রকৃতির প্রাণ ও অলঙ্কার, কৃষকের পরম বন্ধু। অথচ পাখির প্রতি দিন দিন আমরা নির্মম, নিষ্ঠুর হয়ে উঠছি। অকারণে পাখি হত্যা করা হচ্ছে। এতে মানুষের যে খুব লাভ হয় তাও না। তারপরও নির্বিচারে পাখি হত্যায় মেতেছে একদল মানুষ। নেশায় তারা শৌখিন শিকারী। সারা বছর তারা বনের পাখি শিকার করে। ফেসবুকে ছবি দেয়। অথচ তাদের কেউ ধরে না। বিচারের মুখোমুখি হতে হয় না তাদের। বনের পাখি শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। প্রচলিত আইনে শাস্তির কথাও বলা আছে। অথচ এসব অবৈধ পাখি শিকারী ধরাই পড়ে না। শাস্তি হবে কীভাবে?
সম্প্রতি সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয়েছে, ফসলের ক্ষেতে কারেন্ট জাল পাতা হচ্ছে। জালে আটকে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি মারা যাচ্ছে। ছোট চড়ই পাখিও রেহাই পাচ্ছে না। অথচ পাখি ক্ষতিকারক পোকামাকড় খায়। পরাগায়ণেও ভূমিকা রাখে। দু’একসময় হয়তো ফসলের গায়ে ঠোঁকর দিতে পারে, যদিও সেটা খুব নগণ্য। সামান্য কারণে পাখিদের নির্মম মৃত্যুবরণ করতে হচ্ছে। কাকতাড়ুয়া বসানো, টিনের টনটনি বাজানো, ক্ষেতে ঘন করে খুঁটি পুঁতে ফিতা টাঙিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন রকম উপায় আছে, যেগুলো প্রয়োগ করে পাখি তাড়ানো সম্ভব।
কারেন্ট জাল তৈরি, বেচা-বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অথচ প্রকাশ্যেই তা বিক্রি হচ্ছে। কৃষকরা কারেন্ট জাল কিনতে কোনো বাধার মুখে পড়ছে না। স্থানীয় প্রশাসন চাইলে প্রচলিত আইনেই কারেন্ট জাল বিক্রেতাদের ধরতে পারে। উপজেলা কৃষি অফিসে মেধাবী কর্মকর্তার অভাব নেই।
তারা কৃষকদের এ ব্যাপারে বোঝাচ্ছেন না কেন? হত্যা নয়, বিকল্প পদ্ধতিতে পাখি তাড়ানোর পথ দেখিয়ে দিচ্ছেন না কেন? এটা তাদের চাকরির দায়িত্ব তো বটেই, নৈতিক দায়িত্বও। ইতোমধ্যে দেশ থেকে ১৯ প্রজাতির পাখি হারিয়ে গেছে। আরও অনেক প্রজাতি হুমকির মুখে। তাই দেশি পাখি রক্ষার বিষয়টি গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে। এ জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন চাই। নতুবা সব পাখি হারিয়ে যাবে। পাখিশূন্য বাংলাদেশ কারও কাম্য নয়।
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
ঢাকা।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228