ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ডাকবাংলোতে তরুণী ধর্ষণ ঘটনায় ২ এসআই প্রত্যাহার

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
🕐 ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৯

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় এক তরুণীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের দুই এসআইয়ের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে মানিকগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ডাকবাংলোর একটি রুমে ২ রাত ২ দিন আটকে রেখে দুই পুলিশ কর্মকর্তা একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করেন ওই তরুণী। এ সময় বাংলোর অন্য একটি রুমে আটকে রাখা হয় তরুণীর খালাকে।

অভিযুক্ত দুই এসআই হলেন- সাটুরিয়া থানার উপ-পরিদর্শ (এসআই) সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাজহারুল ইসলাম। তবে তারা ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, সাভারের আশুলিয়া এলাকার তার এক খালা সাটুরিয়া থানার এসআই সেকেন্দারের কাছে প্রায় ৩ লাখ টাকা পাবেন। পাওনা টাকা আদায়ে বুধবার বিকেলে ওই খালা তাকে নিয়ে সাটুরিয়া থানায় যান।

এ সময় এসআই সেকেন্দার তাদের দু’জনকে নিয়ে থানা সংলগ্ন সাটুরিয়া ডাকবাংলোতে যান। কিছুক্ষণ পর সেখানে থানার এএসআই মাজহারুল ইসলাম হাজির হন। তরুণী ও তার খালাকে আলাদা রুমে আটকে রাখে তারা। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা তরুণীকে ইয়াবা সেবন করিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। ২ রাত ২ দিন পর শুক্রবার সকালে তরুণী ও তার খালার হাতে ৫ হাজার টাকা তুলে দিয়ে সেকেন্দার তাদের সাটুরিয়া থেকে চলে যেতে বলেন। ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে তরুণীকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো হয় বলেও লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী সাভারে ফিরে প্রথমে তার এক পরিচিত সাংবাদিকের কাছে এ ঘটনা জানান। সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে মৌখিকভাবে এ ঘটনা জানার পর মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার শনিবার রাতেই অভিযুক্ত এসআই সেকেন্দার ও মাহারুলকে থানা থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।

রোববার ওই তরুণী মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে উপস্থিত হয়ে ঘটনার বর্ণনা দেন এবং দুই এসআইয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযুক্ত এসআই সেকেন্দার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আশুলিয়া এলাকার রহিমা বেগম তার কাছে পাওনা টাকার জন্য সাটুরিয়ায় এসেছিলেন। রহিমাকে কিছু টাকাও তিনি দিয়েছেন। তবে তরুণীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

তাহলে কেন তাকে প্রত্যাহার করা হলো এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি কিছুই জানি না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাটুরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুর ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সাটুরিয়া ডাকবাংলোতে ওই নারীকে এসআই সেকেন্দার হোসেনের সঙ্গে পাওনা টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি করতে দেখা যায়। বিষয়টি সেকেন্দারকে দ্রুত মিটিয়ে ফেলার কথা বলা হয়েছিল। ওই সময় অভিযোগকারী তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে কোনো অভিযোগ দেননি। শনিবার রাতে পুলিশ সুপার অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাটুরিয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করেছেন। পরে জানা গেছে, এক তরুণী তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দিয়েছে পুলিশ সুপারের কাছে।

এ ব্যাপারের পুলিশ সুপার (এসপি) রিফাত রহমান শামীম জানান, রাতেই মৌখিক অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাটুরিয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 
Electronic Paper