এদিকে গত ২ বছর ধরে আলু চাষ করে লোকসানের মুখে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের অনেকেই এ বছর আলু চাষ করেননি। আবার অনেকেই লোকসান পুষিয়ে নিতে আলু তুলেই ভুট্টা চাষ শুরু করেছেন। গত বছর জেলায় আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৪ শ ২০ হেক্টর জমি। আর এবার আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জমি। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৫ হাজার ১৩০ টন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, লালমনিরহাটে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হয় বরাবরই। তাই কৃষকরা অন্য ফসলের চেয়ে আলু চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। কিন্তু গত ২-৩ বছর ধরে অসময়ে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে পোকার আক্রমণের কারণে আলুর ফলন কম হয়। আবার ক্ষেতে জ্বলা, কারেন্ট, দাউদসহ নানা রোগ দেখা দিচ্ছে। তাতে কীটনাশক দিয়েও কোনো কাজ হয় না।
জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাবাড়ী ইউনিয়নের তিস্তা চরাঞ্চলের কৃষক মহসিন আলী জানান, প্রতি বছরে তিনি কমপক্ষে ৪-৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করতেন। জমি থেকে আলু উত্তোলনের পর সেগুলো বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজে রাখতেন। কিন্তু গত বছর আলুর দাম না থাকায় কোল্ড স্টোরেজ থেকে তিনি আলু উত্তোলন করেননি। সব মিলিয়ে তার আলু চাষে ৬৫ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। তাই এ বছর তিনি ভুট্টা চাষ করেছেন।
ওই এলাকার অপর আলু চাষি জমসের মোল্লা জানান, আলু চাষ করলেও বাজারে দাম না থাকায় লোকসান হয়েছে তার। তাই আলু তুলেই ওই জমিতে ভুট্টা চাষ করে আলুর ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। আলু চাষে প্রচুর ব্যয়, আবার উৎপাদন অনুযায়ী আলুর দাম না থাকা, আলুতে নানা ধরনের রোগের কারণে কৃষকরা আলু চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে। তা ছাড়া আলু চাষের কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি থাকায় বিপদে পড়তে হয়েছে।
লালমনিরহাট কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিধু ভূষণ রায় বলেন, আমরা কৃষকদের আলু চাষের লোকসান পোষানোর জন্য ভুট্টাসহ অন্য কিছু আবাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। গতবারের কোল্ড স্টোরেজে রাখা আলুগুলো এখন আর খাওয়ার উপযোগী নেই। কারণ বাজারে নতুন আলু চলে এসেছে। সে কারণে কৃষক আলু চাষ না করে ভুট্টাসহ অন্যান্য আবাদে ঝুঁকে পড়েছে।