শীতে বাড়ছে শ্বাসতন্ত্র রোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১২:৩২ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১০, ২০১৯
শীতজনিত কারণে সারা দেশেই হঠাৎ করে বেড়ে গেছে শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। নগর ও আশপাশ এলাকায় এ ধরনের রোগীর আধিক্য দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক), আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতাল, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালসহ চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারগুলোতে কয়েকদিন ধরে এ ধরনের শিশুরোগী বেশি দেখা যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী জানান, শ্বাসতন্ত্রের রোগের মধ্যে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয় নিউমোনিয়ায়। এ ধরনের রোগীর সুস্থ হতে ৩ থেকে ৮ দিন সময় লাগে। শীতের জন্য এ সমস্যা আরও বাড়ছে।
এ সময় শিশুদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে। আর যারা আক্রান্ত হয়, তাদের দ্রুত সেরে ওঠার জন্য আক্রান্তকালীন সময়ে শিশুকে ঠাণ্ডা আবহাওয়া থেকে দূরে রাখতে হবে। সবসময় গরম কাপড় পরিধান ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। নবজাতকদের ঘন ঘন বুকের দুধ দিতে হবে। ডায়রিয়া আক্রান্তকে খাবারের পাশাপাশি স্যালাইন পান করাতে হবে। এ ছাড়া খাবার গ্রহণের আগে হাত ধোয়া নিশ্চিত করার পাশাপাশি খাবার তৈরির ২ ঘণ্টার মধ্যে খাওয়াতে হবে।
তিনি জানান, এ রোগ সারতে অ্যামোক্সিসিলিন, কোট্রিমোক্সাজোল, অ্যাজিথ্রোমাইসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন, সেফট্রায়াক্সোনসহ একাধিক অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয় রোগীদের। কিন্তু নিউমোনিয়ার চিকিৎসায় এসব অ্যান্টিবায়োটিক শতভাগ কাজ করছে না। ফলে রোগ সেরে উঠতে সময় লাগছে।
জানা যায়, বেশিরভাগ শিশু ব্রঙ্কিওলাইটিস, নিউমোনিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহে আক্রান্ত। এ ছাড়া ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু রোগীও ভর্তি হচ্ছে। চমেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শয্যা রয়েছে একশর বেশ। কিন্তু গতকাল বুধবার ওয়ার্ডটিতে ৪০০ জনের বেশি রোগী ভর্তির তথ্য পাওয়া যায়। ফলে ওই ওয়ার্ডে এক শয্যায় একাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে।
এ ছাড়া মেঝেতে চলছে অনেকের চিকিৎসা। আক্রান্তদের মধ্যে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা বেশি। গত ৪ দিন ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছে দেড় বছর বয়সী আনিকা তাবাসসুম।
গত সোমবার রাতে তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাবাসসুমের মা আঞ্জুমা নাছরিন জানান, স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে একদিন ওষুধ সেবন করিয়েছি। অবস্থার অবনতি হওয়ায় এখানে নিয়ে এসেছি। আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিশু ওয়ার্ডে কোনো শয্যা খালি নেই। শয্যা না থাকাতে অনেকে ভর্তি হতে না পেরে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, নবজাতক ও ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের শ্বাসতন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তবে আক্রান্তদের সেরে উঠতে সময় লাগছে, তাই বিপাকে পড়েছেন অভিভাবক ও চিকিৎসকরা।