ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বাগদা চিংড়িতে ভাইরাস : দিশেহারা চাষিরা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
🕐 ৫:৫৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০১৮

বাগদা গলদা ও চিংড়ি রপ্তানি করে সরকার বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে। তার সিংহভাগ রপ্তানি হয় সাতক্ষীরা জেলা থেকে। ছয়টি উপজেলার ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে চিংড়ি চাষ হয়। চিংড়ি রপ্তানি করে সাতক্ষীরা থেকে বছরে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়।

চলতি ২০১৮ মৌসুমে চিংড়িতে ভাইরাস ও মড়ক দেখা দেওয়ায় চাষিদের প্রায় পথে বসার উপক্রম হয়েছে। একদিকে, যেমন রোগবালাইয়ের প্রাদুর্ভাব, অন্যদিকে চিংড়ির দাম কমে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। ফলে জেলার ছোট বড় অসংখ্য চিংড়ি চাষিরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে। চলতি মৌসুমে ১০০ কোটি টাকার ওপরে চিংড়ি মরে গেছে বলে জেলা মৎস্য অফিস জানায়।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০১৮ মৌসুমে সাতক্ষীরার ছয়টি উপজেলার ৪৯ হাজার ১৬৩টি নিবন্ধিত ঘেরে রপ্তানিজাত বাগদা চিংড়ি চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদরে ২ হাজার ১০৫টি, তালায় ১ হাজার ২৯৫টি, দেবহাটায় ২ হাজার ৮২৯টি, আশাশুনিতে ১৩ হাজার ২১৭টি, কালিগঞ্জে ১৪ হাজার ৫৫৯টি ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৫ হাজার ১৫৮টি ঘেরে রপ্তানিজাত বাগদা চিংড়ি চাষ করা হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। গত মৌসুমে এর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬ হাজার মেট্রিক টন।
চিংড়ি চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার আবুল কালাম বাবলা জানান, চলতি মৌসুমে প্রায় দেড় হাজার বিঘার ঘেরে বাগদা চিংড়ি চাষ করেছেন। কিন্তু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঘেরের অধিকাংশ চিংড়ি মরে গেছে। তিনি আরও বলেন, ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে চলতি মৌসুমে আধা-নিবিড় পদ্ধতিতে আরও প্রায় ১০০ বিঘা পরিমাণ পুকুরে বাগদা চিংড়ি চাষ করেছেন। কিন্তু তাতেও মড়ক লেগে সমুদয় চিংড়ি মরে গেছে। এতে ১ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে তার।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম জানান, এ জেলায় চিংড়িতে এত বেশি ভাইরাস দেখা দেওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছে ঘেরে পানি স্বল্পতা ও পরিবেশ সম্মত না হওয়া। জেলার অধিকাংশ ঘেরে ৩ ফুট পরিমাণ পানি থাকে না। তা ছাড়া এখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ঘের তৈরি করা হচ্ছে। যে রেণু পোনা ছাড়া হয় তা জীবাণুমুক্ত নয়। ঘেরের তলা ঠিকমতো সুখানো হয় না। যে কারণে পরিবেশ সম্মত না হওয়ায় ঘেরে মড়ক বা ভাইরাস লেগে মাছ মরে যায়। তারপরও জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকার চিংড়ি চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে যাতে স্বাস্থ্যসম্মত চিংড়ি চাষ যায়।

 
Electronic Paper