বৃহস্পতিবার খুলনার সিএসএস আভা সেন্টারে ইউএসএআইডি'র নবযাত্রা প্রকল্প ও ওয়ার্ল্ড ভিশন আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে তিনি এ কথা বলেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় (এমওডিএমআর), উইনরক ইন্টারন্যাশনাল এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ৪টি উপজেলার ৪০টি ইউনিয়নে ৭ বছরব্যাপী নবযাত্রা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন (আইপিএইচএন)/ ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিসেস (এনএনএস); লাইন ডিরেক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ মোঃ মফিজুল ইসলাম বুলবুল, পিএম-সিএম, সিবিএইচসি, ঢাকার ডাঃ গীতা রানী দেবী, এবং এমআইএস-ডিজিএইচএস, ঢাকার
ডেপুটি চিফ (মেডিকেল) ড. বি.এম. রিয়াজুল ইসলাম ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নবযাত্রা প্রকল্পের সিনিয়র অপারেশন ম্যানেজার আশিস কুমার হালদার, খুলনার সিভিল সার্জর ডাঃ সুজাত আহমেদসহ বিভাগের স্বাস্থ্য খাতের সিনিয়র কর্মকর্তাবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে নবযাত্রা প্রকল্পের সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ড. মুশতাক আহমেদ ইপিআই সাইটগুলিতে সমন্বিত জিএমপি সেশনের বাস্তবায়ন থেকে প্রকল্পের নানা অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষা উপস্থাপন করেন।

নলেজ ম্যানেজমেন্ট, কমিউনিকেশনস অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি ম্যানেজার মেহজাবিন রুপা ইপিআই সাইটগুলিতে এমএইচভিগুলির দ্বারা সমন্বিত জিএমপি সেশন বাস্তবায়নের উপর একটি গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন। এর পরে নবযাত্রা প্রকল্পের এমসিএইচএন উপদেষ্টা ফিরোজ আহমেদ মুক্ত আলোচনা এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ মনজুর মুরশিদ বলেন, সরকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের অবশ্যই অফিসে নিয়মিত আসতে হবে। আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন না হলে, অফিসে নিয়মিত উপস্থিত না হলে এবং নিজের কাজ না করলে স্বাস্থ্য খাতে অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করে কোনো লাভ হবে না। বিদ্যমান স্বাস্থ্য কর্মীদের অবশ্যই সময়নিষ্ঠ হতে হবে।

ডাঃ গীতা রানী দেবী বলেন, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশকে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলিতে কাজ করার জন্য এমওইউ করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক স্থানীয় মানুষের সেবায় খুবই কার্যকর এবং গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে ১৪ হাজার ১৫৪ টি কমিউনিটি ক্লিনিক সেবা দিচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ড. বি. এম. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, বহুমুখী স্বাস্থ্য স্বেচ্ছাসেবকদের হারিয়ে যাওয়া রোগীদের খুঁজে বের করে কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়ে আসা বা অন্য কোথাও পাঠানোর জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল। বাংলাদেশের সব জেলায় এই স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ বা চালু না হলে চারটি উপজেলার তথ্য ও তথ্য জাতীয় ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হবে না।

সকলের জন্য ন্যায়সঙ্গত খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি এবং দুর্বল সম্প্রদায়ের স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করার লক্ষ্যে, নবযাত্রা প্রকল্প ওয়াশ, মাতৃ শিশু স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি, লিঙ্গ, কৃষি এবং বিকল্প জীবিকা, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসসহ বহুমাত্রিক কার্যকলাপের মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দুই জেলার ৮ লাখ ৫৯ হাজার ৭০৪ জনকে সেবা প্রদান করেছে।

নবযাত্রা প্রকল্পের আওতায় ৯০৫ জন সরকারি বহুমুখী স্বাস্থ্য স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয় এবং তারাই ২০২০ সাল থেকে টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে জিএমপি পরিচালনা করছে।
প্রকল্প এলাকায় মোট ২৫ হাজার ৮১৩ জন গর্ভবতী নারী এবং স্তন্যদানকারী মহিলাকে ১৫ মাস যাবৎ ৭২৫ মিলিয়ন টাকা (মাসিক ২,২০০ টাকা) প্রদান করা হয়েছে যেটি স্থানীয় স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে।

নবযাত্রা প্রকল্পের মাধ্যমে ২ বছরের কম বয়সী ৬৫ হাজার ৭৩৯ জন শিশুকে সেবা প্রদান করা হয়েছে। ৭ হাজারেরও বেশি সরকারি স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

স্থানীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্য ও পুষ্টির বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করায় প্রকল্প এলাকায় শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।