ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শরীরের বিনিময়ে খাবার পানি সংগ্রহ

রকমারি ডেস্ক
🕐 ১২:২৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৯, ২০২২

শরীরের বিনিময়ে খাবার পানি সংগ্রহ

পানির জন্য নারীরা যেখানে রীতিমত সংগ্রাম করছে। যেখানে পানি পাওয়া একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ। কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির কোনো কোনো অঞ্চলে চরম পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সেখানে সরকারি উদ্যোগে যে খাবার পানি সরবরাহ করা হয়, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

যদিও ব্যক্তি পর্যায়ে অনেকে বিভিন্ন স্থানে পানি বিক্রি করছে। কিন্তু সেখান থেকে পানি আনতে গিয়ে অনেক মেয়ে ও নারী তাদের শরীর বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকে নিরাপত্তাহীনতা ভুগছেন।

মেরি এমন একজন। যিনি প্রতিদিন আট ড্রাম পানি বহন করেন। তিনি বলেন, কিবেরা অঞ্চলের অনেক মানুষ গরীব এবং পানির দাম দিতে তারা হিমশিম খেয়ে থাকেন।

এক রাতে পানি আনার সময় একজন বিক্রেতা মেরির ওপর হামলা করেছিল। সেখানে ছিল আরো দুইজন পুরুষ। তারা মেরির পোশাক ছিঁড়ে ফেলেছিল। তার চিৎকার শুনে অন্য নারীরা এগিয়ে আসার আগেই তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে লজ্জা ও ভয়ের কারণে সেখানের অনেক নারী পুলিশের কাছে যান না।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, স্থানীয় পুলিশ বলছে, এই ধরণের মামলায় অভিযোগ গঠন করা খুবই কঠিন। কারণ অধিকাংশ ভুক্তভোগিরা এ ধরণের ঘটনা থানায় রিপোর্ট করেন না। সমস্যা হচ্ছে, পুলিশ কখনো ঢালাওভাবে বা সন্দেহের বষে তদন্ত করে না।

কেনিয়ার পুলিশের মুখোপাত্র ব্রুনো শিওসো বলেছেন কেনিয়ার পুলিশের কাছে যেসব ঘটনার রিপোর্ট হয়, সেসব নির্দিষ্ট মামলাগুলো পুলিশ তদন্ত করে। এ ধরনের জানা কোন অভিযোগ এলে, আমরা তদন্তের জন্য তা সাদরে গ্রহণ করি।

কিন্তু পানির এতো বিশাল চাহিদা মেটানোর জন্য সেগুলো যথেষ্ট না। নাইবেরিয়াতে ২০০৫ সাল থেকেই পানির অভাব শুরু হয়েছে। ঘাটতি মেটাতে কিবেরার মত বসতিতে বেসরকারি বিক্রেতারা এগিয়ে এগিয়ে এসেছেন।

অর্থ দিয়ে পানি নিতে গিয়ে অনেক নারী খুব কঠিন পরীক্ষার মধ্যে পড়েছেন।

মেরি বলেছেন, আমি বাকিতে পানি নিতাম। কিন্তু একটা সময় আসল যখন পানি বিক্রেতা আমাকে প্রশ্ন করল ‘এতো বাকি অর্থ তুমি কীভাবে পরিশোধ করবে?’ আমি তাকে বললাম যে, করোনা মহামারির জন্য আমার কিছুই নেই। তিনি আমাকে বললেন, তাহলে তোমার শরীর দিয়ে আমাকে দেনা পরিশোধ করে দিও।

বেনাজীর ওমট্টো, উমান্ডে ট্রাস্ট- ‘ মানসিক পরামর্শের জন্য কিবেরার নারীরা উমান্ডে ট্রাস্ট এর কাছে যাচ্ছেন। এসব সেশন ভুক্তভোগীদের মানসিক চাপগুলো কিছুটা কমানোর ক্ষেত্রে সত্যি সাহাজ্য করছে। তবে তাদেরকে দীর্ঘদিন এমন মানসিক চাপে ভুগতে হয়েছে।

সেখানকার স্থানীয় কয়েকজন যারা বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা ‘পানির জন্য যৌনতার সমাপ্তি’ নামে প্রচারণা দল গঠন করেছেন। তারা আরো নারী নিয়োগের জন্য ট্যাঙ্ক মালিকদের বোঝাতে শুরু করেছেন।

পানি বিক্রেতা যখন একজন নারী তখন ক্রেতা হিসেবে অন্য নারীরা স্বস্তি প্রকাশ করছেন।
এক নারী ক্রেতা বলছেন, পানি কিনতে আসলে আগে এখানে অনেক যুবকের ঘোরাফেরা ও গাজা সেবন করতে দেখতাম।

বর্তমানে জাতীয় পর্যায়ে একটি পরিবর্তনের চেষ্টা করছে একটি বেসরকারি সংস্থা। তাদের উদ্দেশ্য পানি সরবরাহের সময় নাজুক ক্রেতাদের যেন কেউ শোষণ করতে না পারে।

ভিনসেন্ট ওয়ুমা, প্রধান ডিরেক্টর কেওয়াসনেট বলছেন, ‘আমরা এসব ইস্যুতে একটি আইন চাই যাতে নারীদের সম্মান, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়। আর অবশ্যই তাদের স্বাধীনতা চাই।’

 
Electronic Paper