তুলির আঁচড়ে জীবন্ত বাংলার রূপ
লাবু হক, রাবি
🕐 ৩:১০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৪, ২০২২
সারি সারি তালগাছ। মাঝ দিয়ে পাশের গ্রামের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছে এক মেঠোপথ। মেঠোপথ দিয়ে গরু নিয়ে মাঠের দিকে ছুঁটছে রাখাল। পথের ধারে সোনালী ধান। পাশ দিয়েই বয়ে চলেছে ছোট্ট নদী। নদীতে নৌকা বাইছে মাঝি। আহা কি সুন্দর! নয়নাভিরাম। কালের আবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার এই অপরূপ সৌন্দর্য্য। ইট-পাথুরের যুগে আর হরমামেশায় চোখে পরে না খেয়া পারাপারের, দেখা মেলে না ধান কাটতে ব্যস্ত কাস্তে হাতে কৃষকের ছবি।
তবে হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার এই অপরূপ সৌন্দর্য্যগুলি প্রতিনিয়তই ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পী নুর আলম। তার শৈল্পিক হাতে রঙ-তুলির ছোঁয়ায় ক্যানভাসে স্থান করে নিচ্ছে জীবন্ত বাংলার রূপ। শিল্পী নুর আলম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। পড়েছেন চারুকলা অনুষদের চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগে। ২০১৫ সালে স্নাতক ও ২০১৬ সালে এই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে ১ বছর মেয়াদি বিএড কোর্স সম্পন্ন করেন তিনি।
তার বাড়ি রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার নটাবাড়ী গ্রামে। বর্তমানে তিনি মৌলভীবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (চারুকলা) হিসেবে কর্মরত আছেন।গ্রাম বাংলার জীবন্ত ছবি আঁকার বিষয়ে কথা হয় শিল্পী নুর আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ছোটোবেলা থেকেই ছবি আঁকার প্রতি আগ্রহ ছিল তার। বাবা ও ভাই ছবি আঁকতেন।
জনকেই অনুসরণ করতেন তিনি। নতুন বই পেলে আগে দেখতেন সেই বইয়ের ছবি। পড়ার চেয়ে ছবি দেখে বেশি আনন্দ পেতেন। খাতায়, বইয়ের পাশে ফাঁকা জায়গায় মনের কল্পনা আঁকতেন ছবি। কাঠি দিয়ে মাটির উপরে ছবি আঁকতেন, সেই সঙ্গে বিভিন্ন লেখার ফ্রন্ট আঁকার চেষ্টা করতেন। এমনও সময় গেছে দিনরাত মানুষের প্র্যাকটিক্যাল খাতার ছবি এঁকে।
এভাবেই ছবি আঁকার প্রতি দিনের পর দিন আগ্রহ বাড়তে থাকে তার। ছোটোবেলা থেকে চারুকলায় শিক্ষাজীবন পর্যন্ত জলরঙ, তেলরঙ, অ্যাক্রেলিকসহ প্রায় সব মাধ্যমে ছবি এঁকেছেন নুর আলম। তিনি বলেন, বর্তমানে ক্যানভাসে অ্যাক্রেলিক রঙে হারিয়ে যাওয়া ‘বাংলার রূপ’ নিয়ে ছবি আঁকছি। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক রূপ বৈচিত্রকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছি।