মডেল তিন্নি হত্যা মামলা: ৬ সাক্ষীর পুনঃসাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৯:৩১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১০, ২০২২
গত ৫ জানুয়ারি মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি হত্যা মামলার রায় দেওয়ার নির্ধারিত তারিখে ঢাকার ৭ম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেশব রায় চৌধুরী ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য পুনরায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় তিন্নির বাবা সৈয়দ মাহবুবুল করিম, চাচা সৈয়দ রেজাউল করিম, দুজন গৃহকর্মী শেফালী আক্তার ও বিনা, বিভিন্ন মামলায় কারাগারে আটক সানজিদুল ইসলাম ইমন ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশের এএসপি মোজাম্মেল হক আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। গত ২২ জুন পুনঃসাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। মামলাটি এখন যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্যের পর্যায়ে রয়েছে।
জানা যায়, তিন্নির বাবা সৈয়দ মাহবুবুল করিম তার তিন্নির মৃত্যু সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তিনি আদালতে বলেন, আমি পত্রিকায় পড়েছি আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু কীভাবে আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানিনা বিধায় আমি কোনো মামলা করিনি। চাচা সৈয়দ রেজাউল করিমও তিন্নির মৃত্যু সম্পর্কে আদালতে কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
তিনি আদালতে জানান, তিন্নির মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, এই মর্মে থানায় ডায়েরি করেছিলেন। মামলার সাক্ষী তিন্নির বাসার তৎকালীন গৃহকর্মী শেফালী আক্তার আদালতে তার সাক্ষ্যে বলেন, তিন্নি আত্মহত্যা করেছিলেন। এটি তখন থেকেই তিন্নির পরিবার ও স্বজনরা জানেন।
তিনি আদালতে আরো জানান, তিন্নি ছিলেন আত্মহত্যাপ্রবণ এবং প্রায়ই আত্মহত্যা করার কথা বলতেন। এমনকি ২০০২ সালের নভেম্বরের ১০ তারিখে বুড়িগঙ্গা ব্রিজ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করার মাত্র মাত্র ৬ দিন আগে তিন্নি নিজ বাসায় ৩০টি ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। মামলার অপর সাক্ষী গৃহকর্মী বিনা বলেন, তিন্নি আত্মহত্যা করেছেন, তাকে কেউ হত্যা করেনি।
বিভিন্ন মামলায় কারান্তরীণ রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান সাক্ষী সানজিদুল ইসলাম ইমন আদালতে জানান, ২০০৮ সালে তিনি গ্রেফতার হয়ে সিআইডির রিমান্ডে ছিলেন। তখন সিআইডির কর্মকর্তারা তাকে তিন্নি হত্যা মামলায় সাক্ষী হতে হবে অথবা সাক্ষী না হলে এই মামলায় আসামি করা হবে বলে হুমকি দেন। তারা তাকে একটি কাগজে সাক্ষর করতে বাধ্য করেন। এই কাগজে কি লেখা তাও তাকে দেখতে দেওয়া হয়নি। তিনি মডেল তিন্নির মৃত্যু সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে আদালতে জানান।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত সিআইডি কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক আদালতে জানান, তিনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের স্বাক্ষরকৃত কাগজের ভিত্তিতে তিন্নি হত্যা মামলার চাজর্শিট দিয়েছেন। তবে ঐ কাগজে বর্ণিত তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে কোনো তদন্ত করেননি বলেও আদালতে জানান।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে তিন্নি হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। ২০১৮ সালের অগাস্ট মাসে মামলাটি রায়ের জন্য নির্ধারিত ছিল। মামলার রায়ের তারিখ এ পর্যন্ত ৩২ বার পরিবর্তন করা হয়েছে