ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

তিস্তার ভাঙনে নদী গর্ভে

গাছ দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা!

মোস্তাক আহমেদ, কাউনিয়া (রংপুর)
🕐 ৮:২৩ অপরাহ্ণ, জুন ৩০, ২০২২

গাছ দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা!

কাউনিয়ায় বর্ষা মৌসুম এলেই গরু-বাছুর, গাছপালাসহ মূল্যবান সম্পদ নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয় নদী ভীরের মানুষ কে। ১১ গ্রামের মানুষ তাদের জানমাল রক্ষায় ২কিঃমিঃ গার্ডব্যাংক নির্মানের দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। ইতোমধ্যে অতিবৃষ্টি আর উজানের ঢলে দুই দফা চরা লের কৃষকের উর্তি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন শুরু হয়েছে নদী ভাঙন।

সরেজমিনে তিস্তা নদী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নদী পাড়ের মানুষের কাছে এক আতঙ্কের নাম ভাঙন। কাউনিয়ায় প্রতিবছরই বিস্তীর্ণ এলাকা নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়। এতে বসতভিটা জায়গা-জমি সব হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে হাজার হাজার পরিবার। রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদরাসা, মন্দিরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা নদী পাড়ের মানুষ।

তীব্র ভাঙনে দিশেহারা হয়ে ভিটেবাড়ি হারানোর শঙ্কায় কাউনিয়ার ২ ইউনিয়নের ১১ গ্রামের মানুষ। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিস্তার ভাঙনে টেপামধুপুর ইউপির চরগনাই গ্রামের আয়শা, ছলিম উদ্দিন, সিরাজুলসহ ১৭টি পরিবার ও ১০ হেক্টর ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে এই এলাকার নানা স্থাপনা। নদী ভাঙ্গনের পদধ্বনিতে শংকিত হয়ে পড়েছে নদী ভীরবর্তি এলাকার মানুষ।

চরগনাই গ্রামের দুদু মিয়া জানান, তার আবাদি যে জমি ছিল তার সব নদী গিলে খেয়েছে, এখন বাড়িটি যে কোন সময় তলিয়ে যেতে পারে সেই শংকায় নিঘুম রাত কাটাচ্ছি।

বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী বলেন, কদিন আগে তার ইউনিয়নে অনেকের ফসল ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সেই দুর্ভোগ এখনো কাটেনি এরই মধ্যে শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গন।

টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম জানান, তার উইনয়নের চরগনাই ও বিশ্বনাথ গ্রাম ২টি মারাত্বক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ইতোমধ্যে ১৭টি বাড়ি ১০ হেক্টর ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। নদী ভাঙ্গনে মানুষের দুর্ভোগের শেষ নাই। নির্বাহী অফিসার ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শনে এসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ৩টন চাউল বরাদ্দ দিয়েছেন।

কৃষি কর্মকর্তা শাহানাজ পারভীন জানান, তিস্তার ভাঙ্গনে ফসলী জমি বিলীন হচ্ছে। ভাঙ্গন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করা প্রয়োজন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহ্মিনা তারিন বলেন, তিস্তার ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছি, ক্ষতিতগ্রস্তদের জন্য ২০ টন চাল বিতরন অব্যাহত আছে তাছাড়া ভাঙ্গন ঠেকাতে আড়াই হাজার জিও ব্যাগ পাওয়া গেছে। ভাঙ্গনের বিষয়টি আমরা নজরদারীতে রেখেছি।

কাউনিয়ায় প্রতিবছর শতশত একর ফসলী জমি ও বাড়ি-ঘর নদী ভাঙ্গনে মানুষ নিঃস্ব হচ্ছে। বাপ দাদার ভিটে-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব পরিবারগুলো ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মানের দাবি জানিয়েছেন। এই অভিশাপ থেকে মুক্তির জন্য তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন চায় নদী পাড়ের মানুষ।

 
Electronic Paper