ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দৌলতদিয়া নৌরুটে যানবাহন কমেছে

সিরাজুল ইসলাম, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)
🕐 ৮:২১ অপরাহ্ণ, জুন ৩০, ২০২২

দৌলতদিয়া নৌরুটে যানবাহন কমেছে

পদ্মা সেতু উদ্ভোধনের পর থেকেই দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ কমে গেছে। ঘাট সুত্রে জানাযায় ফেরি পারাপার যানবাহনের ক্ষেত্রে চল্লিশ শতাংশ এবং লঞ্চ পারাপারে যাত্রীর সংখ্যা ষাট শতাংশ কমে গেছে। এদিকে ঘাট এলাকায় যানবাহন কম আসায় দুর্ভোগ ছাড়াই যাত্রীরা সহজে লঞ্চ ও ফেরি পার হতে পারছেন। যাত্রী ও যানবাহনের চাপ না থাকায় ঘাট কেন্দ্রীক ব্যাবসা বানিজ্য কমে গেছে।

বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডাব্লিউটিসি) আরিচা অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরিতে পার হয়েছে ৪৪৪টি বাস। এছাড়া ট্রাক ১ হাজার ১১৭টি ট্রাক, ১ হাজার ৯৫টি ছোট গাড়ি পারাপার করেছে।

দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ফেরি পার হয়ে পাটুরিয়া গেছে ৪৫১টি বাস, ১ হাজার ১২৯টি ট্রাক এবং ছোট ১ হাজার ১৩০টি ছোট গাড়ি। সব মিলিয়ে পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি পার হয়েছে ৫ হাজার ৩৬৬টি গাড়ি। কিন্ত ২৬ জুনের আগে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে উভয় ঘাট মিলে গড়ে ৮ হাজার ৪০০ বিভিন্ন প্রকার যানবাহন ফেরি পারাপার হতো। সেই হিসেবে ৪০ শতাংশ যানবাহন কমেছে এই নৌরুটে।

দৌলতদিয়া ঘাট সুত্রে জানাযায়, রোড পারমিট না থাকায় এখনও অনেক যাত্রীবাহী বাস পদ্মা সেতু দিয়ে যেতে পারছে না। তাছাড়া কালনা সেতু এখনো কমপ্লিট হয়নি। এই সেতু এবছর সেপ্টেম্বর মাসে চালু হওয়ার কথা রয়েছে। তখন যশোর, নড়াইল ও মাগুরা রোডের যাত্রীরা এই রাস্তা ব্যাবহার করবে না। কালনা সেতু চালু হলে এবং অন্য গাড়িগুলো রোড পারমিট পেলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নেমে যাবে।

এদিকে চলতি মাসের ১৯ জুন থেকে সারাদেশে নৌরুটে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেই হিসেবে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে মিনিবাস ১ হাজার ৫০টাকা, মাঝারী বাস ১ হাজার ৭৫০ টাকা এবং বড় বাস ২ হাজার ১০০টাকা ফেরি পারাপারের জন্য নির্ধারন করা হয়েছে। এছাড়া ট্রাক ১টন পর্যন্ত ৬৬০ টাকা, ১ থেকে ৩ টন পর্যন্ত ৭৪০টাকা, ৩ থেকে ৫ টন পর্যন্ত ৮৮০ টাকা, ৫ থেকে ৮ টন পর্যন্ত ১ হাজার ৬০টাকা, ৮ থেকে ১১টন পর্যন্ত ১ হাজার ৪৬০ টাকা নির্ধারন হয়েছে।

মাক্রোবাস, অ্যাম্বুলেন্স, বড় টেম্পু, হিউমেন হলার ১হাজার টাকা। স্টেশন ওয়াগন, ল্যান্ড ক্রুজার জাতীয় গাড়ি, বড় জিপ, প্রাডো নিশান, পাজোরো ও প্রেট্টোল জাতীয় লাক্সারি গাড়ি ৯০০ টাকায় ঘাট পার হতে পারছে।

বাংলাদেশ অভ্যঅন্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) ঘাট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুটে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭২ লাখ ৯৪ হাজার ১৬০ টাকা। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে এই দুই ঘাট মিলিয়ে রাজস্ব আদায় হতো ১ কোটি ৪০ লাখ থেকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

তবে বিভিন্ন ট্রাক ও বাসের চালকেরা বলেন এখন ঘাটে আসলে দশ পনের মিনিটের মধ্যে গাড়ি পাওয়া যায় আগের মতো যানজটে পরে থাকতে হয় না।

দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের ম্যানেজার নুরুল আলম মিলন বলেন, ‘যাত্রীশূন্য হয়ে গেছে লঞ্চঘাট। দূরপাল্লার পরিবহনসহ লোকাল যাত্রী না আসায় প্রতিটি লঞ্চ ৩০-৪০ জন যাত্রী নিয়ে ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী লঞ্চগুলো চলাচল করছে।’

বিআইডব্লিউটিএ’র দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আফতাব হোসেন বলেন, ‘দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে যাত্রী অনেক কম। আমরা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী লঞ্চ চলাচলে সহযোগিতা করছি।’

বাংলাদেশ অভ্যঅন্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা বন্দরের উপপরিচালক শাহ খালেদ নেওয়াজ জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহার করে অনেক যানবাহন ফেরি পারাপার হচ্ছে। আগের তুলনায় যানবহনের সংখ্যা ৪০ শতাংশ কম। আর এই নৌরুটে ২২টি ছোট বড় ফেরি রয়েছে। যানবাহন কম থাকার কারণে ৩টি ফেরি বসিয়ে রাখা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, ঈদের এক মাস পর বোঝা যাবে এই নৌরুটে কি পরিমাণ গাড়ি চলাচল করছে। তবে এই নৌরুটে বর্তমানে কোনো যানজট নেই।

 
Electronic Paper