ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

‘৬০ টাকা বেতনে চাকরি করে তানভীর’

আরিফ মোস্তফা, পিরোজপুর
🕐 ৯:৪১ অপরাহ্ণ, জুন ২৮, ২০২২

‘৬০ টাকা বেতনে চাকরি করে তানভীর’

বাবা বিয়ে করে অন্যত্র চলে গেছেন। একারণে মাকে অর্থনৈতিক সহায়তা করার জন্য অপরিণত বয়সেই আয় করতে নেমেছে তানভীর শেখ (১১)। কাজ করছে পিরোজপুর শহরের সোনালী ব্যাংক সড়কে থাকা একটি চায়ের দোকানে। বেতন মেলে ৬০ টাকা। প্রায় ৬ মাস ধরে এ কাজটি করছে তানভীর। তানভীরের বাবার নাম আলমগীর শেখ।

পেশায় সে একজন ফেরিওয়ালা (ঝালমুড়ি বিক্রয় করেন আলমগীর)। সম্প্রতি কথা হয় তানভীরের সাথে। সে জানায় তারা ৩ ভাই মায়ের সাথে আছে। বাবা কয়েক বছর আগে বিয়ে করে অন্যত্র চলে গেছে। বড় ভাই ইব্রাহিম ও মেঝ ভাই আবু সাইদ কাজ করে। তানভীর জানায় সে শহরের শিশু কল্যান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেনীতে পড়ে।

আলাপকালে তানভীর বলে শহরের মধ্য রাস্তা এলাকায় বাসা ভাড়া দিয়ে থাকতে হয় তাদের। এরপর সে বলে প্রতিদিন সকাল ৬টার দিকে চায়ের দোকানে আসতে হয় তাকে। দোকান মালিক মিলনের সহযোগী হিসেবে কাজ করে সে। তাদের চায়ের দোকানের সামনের মার্কেট ও আশপাশের দোকান ঘুরে চায়ের অর্ডার নেয় সে। এরপর কখনো তার মালিক মিলু আবার কখনো সে নিজে চা তৈরী করে সেসব জায়গায় পৌছে দেয়।

শহর নীরব হতে শুরু করলে তানভীর তার দোকানের জিনিসপত্র ধুয়ে মুছে মালিকের সাথে বাজারে যায়। এরপর বাজার থেকে আগামী দিনের জন্য চা-চিনি কিনে দোকানে রেখে বাড়ি ফেরে। সাথে আনা কামাই করা ৬০ টাকা মায়ের হাতে গুজে দেয় সে।

ভানভীর বলে গেল ঈদের দিনও চায়ের দোকানে কাজ করেছে সে। তানভীরদের চায়ের দোকানের উল্টো দিকে থাকা জেলা পরিষদ মার্কেটের মোবাইল ব্যবসায়ী পারভেজ জানায় গেল রোজার শেষ দিন তানভীর মার্কেট ঘুরে আমাদেরকে বলে গেছে ঈদের দিন আমাদের চায়ের দোকান খোলা থাকবে যাইয়েন।

তানভীরে চায়ের দোকানের মালিক মিলু বলেন, তানভীরকে ৬০ টাকা বেতনদি আর দুপুরে খাওয়াই। বাবার কথা মনে পড়ে কিনা জানতে চাইলে চোখ ছল ছল করে ওঠে তানভীরের। এরপর সে বলে হাটতে হাটতে পা ব্যাথা হয়ে যায়। বাবায় কাছে থাকলে হয়তো এত কষ্ট করা লাগতোনা এই অল্প বয়সে।

 

 
Electronic Paper