ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আজমিরীগঞ্জে বন্যায় বিপর্যস্থ জনজীবন, ত্রাণ অপ্রতুল

এনামুল হক মিলাদ, আজমিরীগঞ্জ
🕐 ৭:৪৬ অপরাহ্ণ, জুন ২১, ২০২২

আজমিরীগঞ্জে বন্যায় বিপর্যস্থ জনজীবন, ত্রাণ অপ্রতুল

পাহাড়ি ঢল এবং উজান থেকে নেমে আসা পানিতে সিলেট সুনামগঞ্জের পর গত ১৭ ই জুন সকাল থেকে হবিগঞ্জে ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে বন্যা। বন্যায় সবচেয়ে বেশী বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার ভাটীর রাজধানীখ্যাত আজমিরীগঞ্জ উপজেলা।

প্রতিদিনই বাড়ছে পানি, প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম। ইতিমধ্যেই উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৮০ ভাগই বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বন্যা কবলিতদের জন্য উপজেলায় ইতিমধ্যেই সকল স্কুল কলেজে খোলা হয়েছে আশ্রয়ণ কেন্দ্র।

সরজমিনে উপজেলার সদর,বদলপুর, কাকাইলছেও, জলসুখা, শিবপাশা ইউনিয়ন সহ পৌরসভার সবকটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখাযায় প্রায় ৮০ শতাংশ বাড়ি,দোকানপাট, স্কুল পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে বাঁধ,সড়ক ভেঙ্গে প্রবল বেগে হাওড়গুলোতে প্রবেশ করছে পানি। সড়ক ভাঙ্গনের ফলে ইতিমধ্যেই কাকাইলছেও, বদলপুর ইউনিয়নের সাথে সদর উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

পৌরসভা ও ইউনিয়নগুলোর অভ্যন্তরীণ সংযোগ সড়কগুলোতে পানি উটে যাওয়ার ফলে স্থানীয় যোগাযোগ ব্যবস্থাও প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে। জলসুখা,সদর ইউনিয়ন এবং বদলপুরে বেশ কটি আশ্রয়ণ কেন্দ্রে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়ণ কেন্দ্রে ত্রাণ বিতরন শুরু করা হয়েছে। তবে আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দারা বলছেন যে পরিমাণ ত্রাণ দেয়া হচ্ছে তা আশ্রয়ণ কেন্দ্রের সবাই পাচ্ছেন না।

জলসুখা ইউনিয়নের দক্ষিণ আটপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিগত ১৮জুন থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন আটপাড়া গ্রামের ষাটোর্ধ নানু মিয়া। ত্রাণ পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান-মঙ্গলবার (২১জুন) উপজেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ দেয়া হয়েছে, তবে আমি সহ অনেকেই পাইনি।

একই আশ্রয়কেন্দ্রের জোৎস্না আক্তার এবং জাহান আলী মিয়া জানান-ত্রাণ দেয়া হলেও আমরা পাইনি সন্তানদের মুখে শুকনো খাবার তুলে দিচ্চি তিনদিন যাবত।

কাকাইলছেও ইউনিয়নের খাদ্য গুদামে আশ্রয়ন কেন্দ্রের কয়েকজন জানান-তিনদিন যাবত এখানে আছি, নৌ পুলিশ ফাঁড়ি থেকে চিড়া, দুই লিটার পানি, স্যালাইন, দেয়া হয়ছে। রোববার ডিসি সাহেব এসেছিলেন বিস্কুট দিয়ে গেছেন। নিজেরা কাজ করতে পারছি না সন্তাানদের মুখে কি তুলে দিবো।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিনহাজ আহমেদ শোভন জানান-শেরপুর অংশে কুশিযারার পানি বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্চে এবং আজমিরীগঞ্জ অংশে বিপদ সীমার ১৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। হাওড়গুলোতে পানি ভরে যাওয়ায় পানি নামছে না। মনু নদী দিয়ে পানি প্রবেশ করে নবীগঞ্জ এবং আজমিরীগঞ্জে পানি বৃদ্ধি পাবে,আরো এলাকা প্লাবিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা সালেহা সুমী জানান, আমরা আশ্রয়ন কেন্দ্র গুলোতে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছি। কেউ যদি বাদ পড়ে তবে নতুন তালিকা করে তাদের ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হবে। আর আশ্রয়ন কেন্দ্রে পানি প্রবেশ করার তথ্য এখনো আমরা পাইনি যদি এমন হয় তবে তাদের অন্যত্র সরিয়ে আনা হবে।

 
Electronic Paper