ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

মামলায় অযাচিত সময়ক্ষেপণে জরিমানা বাড়ানো হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৮:৫৭ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২২

মামলায় অযাচিত সময়ক্ষেপণে জরিমানা বাড়ানো হচ্ছে

মামলায় অযাচিত সময়ক্ষেপণে বিধান মোতাবেক যে জরিমানা নির্ধারণ করা আছে তার পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

শনিবার (২১ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মামলাজট নিরসনে বিজ্ঞ গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) ও পাবলিক প্রসিকিউটরদের (পিপি) সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সভার আয়োজন করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

আইনমন্ত্রী বলেন, দেওয়ানী কার্যবিধি আইনের বিভিন্ন জায়গায় সময় বেধে দেওয়া আছে। কিন্তু সেটা এখন বোধহয় আর দরকার নেই। তাই কমিটি করে দিয়েছি। সেই কমিটি দেওয়ানী কার্যবিধির মামলায় যে বেধে দেওয়া সময় রয়েছে তা কতটুকু কমিয়ে আনা যায়, সে বিষয়ে কাজ করছে।

মামলায় অযথা সময়ক্ষেপণ মামলাজট বৃদ্ধির অন্যতম কারণ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মামলায় অযাচিত সময়ক্ষেপণে বিধান মোতাবেক যে জরিমানা নির্ধারণ করা আছে তার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ ধারায় ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগীকে আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের সময়... চরিত্র নিয়ে যে প্রশ্ন করা হয় তা অত্যন্ত মানহানিকর। নারীদের আমরা বেইজ্জতি করতে পারি না। তাই সে ধারা সংশোধনে কাজ চলছে।

ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের প্রয়োগের বিষয়ে উপস্থিত পিপিদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এই আইনে কোনো মামলা হলে আপনারা দেখবেন সেটি আদৌ ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অধীনে হয়েছে কিনা। বাংলাদেশের সংবিধানে পরিষ্কারভাবে বাকস্বাধীনতাকে মৌলিক অধিকার বলে উল্লেখ করা আছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধানে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কথা ইনকরপোরেট করে দিয়ে গেছেন। যেখানে আমাদের জাতির পিতা এটাকে একটা মৌলিক অধিকার হিসেবে উল্লেখ করে দিয়েছেন সেখানে তার কন্যার সরকার...এমন আইন কী করতে পারে যাতে বাকস্বাধীনতা বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ব্যহত হয়। না..., এটা করতে পারে না এবং আমরা সেটা করিনি। তবে প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে কিছু সমস্যারও সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলো সাইবার ক্রাইম। এখন দণ্ডবিধির অনেক অপরাধ রয়েছে যেগুলো ফিজিক্যালি করা হয়, কম্পিউটারের মাধ্যমে করা হয়। সেটাকে আইনের ভেতর থেকে বিচার করবেন কিভাবে? সেটার বিচার করার জন্যই আমরা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট করেছি।

এই আইনের অপপ্রয়োগ যে কিছুটা হয়নি, তা কিন্তু নয়। আগে এই আইনে মামলা হলেই সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা হতো। আমরা বলেছি, সেটা যেন না হয়। এজন্য সেল করে দিয়েছি। কোনো অভিযোগ আসলে তা প্রথমে সেলের কাছে পাঠানো হবে। এরপর সেখানে যদি গ্রহণযোগ্য মনে হয় তাহলে কোর্ট মনে করলে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

আনিসুল হক বলেন, মামলাজট বিরাট এক সমস্যা। সমগ্র বিশ্বেই এটি একটি বিরাট সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের প্রধান বিচারপতি বলেছেন, সেখানে চার কোটি মামলার জট রয়েছে। আর আমাদের এখানে চল্লিশ লাখ মামলার জট। ভারতের জনগণ ও বিচারক সংখ্যার অনুপাতে আমাদের দেশের মামলাজট যে অনেক বেশি, তা কিন্তু নয়। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন..., বিচার দ্রুত করা না হলে আইনের শাসনে ব্যত্যয় ঘটতে পারে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার বিচার দ্রুত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত জিপি ও পিপিদের উদ্দেশ্যে আনিসুল হক বলেন, আপনাদের প্রতি অনুরোধ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ও জনগণের হয়রানি বন্ধে আইনের মধ্যে থেকে যতটুকু করা সম্ভব ততটুকু আপনারা করবেন।

অনুষ্ঠানে দেশের অধস্তন আদালতগুলোর জিপি ও পিপি, অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার উপস্থিত ছিলেন।

 
Electronic Paper