সোনাইমুড়িতে হোন্ডা চোরের উপদ্রব বেড়েই চলছে
সৈয়দ মোঃ শহিদুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার:
🕐 ১:৪১ অপরাহ্ণ, মে ১৪, ২০২২
সোনাইমুড়ীতে হোন্ডা চোরের উপদ্রব আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর থেকে রেহাই পাচ্ছেনা সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ীরা। উপজেলা হোন্ডা থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকার চুরি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অনেকেই বলছেন, সোনাইমুড়ি উপজেলা চোরদের জন্য স্বাধীন ভূখন্ড হয়ে দাড়িয়েছে। যার ফলে চোর চক্র তাদের কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চুরির কার্যক্রম দীর্ঘদিন থেকে চালিয়ে যাচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে কিংবা থানায় অভিযোগ করেও এর প্রতিকার না পাওয়ায় চোর চক্রের দৌরাত্ব দিনকে দিন বেড়েই চলেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত চার মাসে সোনাইমুড়ীতে ধারাবাহিক ভাবে হোন্ডা চুরি, সিঁদেল চুরি, বেড়া কেটে চুরি, খাদ্যে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে ঘরের সর্বস্ব লুটের ডজন খানিক ঘটনায় সোনাইমুড়ী থানায় একাধিক মামলা হলেও পুলিশি তদন্তে এর কোন কুল কিনারা হয়নি। তদন্তের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে চোর সিন্ডিকেট দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, সর্বশেষ গত বুধবার (১১মে) দুপুর ১২টার দিকে সোনাইমুড়ী বড় মসজিদের বিপরীতে আলী টাওয়ারের সামনের ব্রীজ হতে ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়ার হোন্ডা চুরি হয়। ৮ মে দুপুরে সোনাইমুড়ী এছাক মিয়া সড়ক থেকে ইনসেপ্টা কোম্পানির এমপিও সমরেশ চন্দ্র ঘোষের হোন্ডা চুরির ঘটনা ঘটেছে। এর আগে উপজেলার দেওটি ইউপির শুরহলী গ্রামের বাবুল ডাক্তার ৩০ রমজান মসজিদের পাশে হোন্ডা রেখে নামাজ পড়ার পর বের হয়ে দেখে হোন্ডাটি চুরি হয়ে গেছে। বারগাঁও ইউপির রাজিব পুর গ্রামের উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শিপন এর বাড়ি থেকে তার হোন্ডা চুরি হয়। এর এক সপ্তাহ আগে ২৬ মার্চ দিবাগত রাতে উপজেলার দেওটি ইউপির আন্দিরপাড় গ্রাম হতে সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি খোরশেদ আলম শিকদার এর হোন্ডা চুরির ঘটনা ঘটে। ফেব্রুয়ারী মাসে চুরি হয় জয়াগ ইউপির আনন্দীপুর গ্রামের জামাল কন্ট্রেকটারের হোন্ডা। তার সপ্তাহ খানিক আগে চুরি হয় একই গ্রামের সর উদ্দিন পাটোয়ারী বাড়ির মৃত সাখাওয়াত উল্যাহ পাটোয়ারীর ছেলে হতদরিদ্র জয়নাল আবেদীন এর অটোরিকশা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সোনাইমুড়ী পৌরসভার ভানুয়াই গ্রামের মহিন উদ্দিন এর হোন্ডা চুরি হয়।
এছাড়া গত ২ মাস পুর্বে উপজেলার সোনাপুর ইউপির সোনাপুর গ্রামের তাজুল ইসলাম পাটোয়ারীর ঘরে খাদ্যে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে ঘরের সবাইকে অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকারসহ ৬ লক্ষাধিক টাকা লুটে নিয়ে যায় চোরের দল, এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বজরা ইউপির শীলমুদ গ্রামের গ্রাম সরকারের নতুন বাড়ির শাহ আলমের ঘরের দরজা ভেঙে চোরেরা ঘরে প্রবেশ করে ৬ভরি স্বর্ণালংকারসহ নগদ টাকা নিয়ে যায়। গত মার্চ মাসের শেষের দিকে পৌরসভার বরলা পাটোয়ারী বাড়ির ইকবাল হোসেন হেলালের পরিবার বাড়িতে না থাকার সুযোগে বসত ঘরের দরজার তালা ভেঙ্গে প্রায় ১০ভরি স্বর্ণালংকারসহ নগদ টাকা নিয়ে যায় চোরের দল। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানা যায়।
এসব চুরির ঘটনায় সোনাইমুড়ী থানায় একাধিক মামলা হলেও তদন্তে আলোর মুখ দেখেনি। সচেতন মহল মনে করছেন পুলিশি তদন্তে দুর্বলতার কারণে চুরি হওয়া মালামাল ও হোন্ডা উদ্ধার করতে পারছেনা পুলিশ। যে কারণে চোরের দল দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
সোনাইমুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুনুর রশিদ জানান, গত বুধবার (১১মে) চুরি হওয়া মালামালসহ কিশোর গ্যাং এর নোয়াখালী সদর থানার খলিসাটোলা এলাকার মাইন উদ্দিন পাটোয়ারী বাড়ির মৃত রহমত উল্যার ছেলে রিদয় (১৪), লক্ষীপুর জেলার তোরাবগঞ্জ গরুর হাট এলাকার আলমগীর এর ছেলে মোঃ সোহেল (১৪), একই জেলার রায়পুর উপজেলার চরমন্ডল পানা মিয়া মিঝি বাড়ির ইসমাইল হোসেন এর ছেলে আবদুল মজিদ (১৪), বেগমগঞ্জ উপজেলার করিমপুর খালপাড় এলাকার মানিকের ছেলে ফরহাদ (১৫) সহ ৪ জন চোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
হোন্ডা চুরির বিষয়ে তিনি জানান, এই চক্রে আন্তজেলা চোর সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে, এদের ধরতে র্যাব পুলিশ যৌথ ভাবে কাজ করছে। আশা করি খুব অল্প সময়ের মধ্যে এর একটা সমাধান।